আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মানুষের জীবনে পরিবারের গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের জীবনের গল্পে ঘুরে-ফিরে এই অনুষঙ্গ প্রধান হয়ে ওঠে।
তেমনি এক পারিবারিক অনুষঙ্গ চীনে তুমুল আলোড়ন ফেলেছে। ৩৩ বছর বয়সী এক নারী ১২ বছর ধরে সংগ্রাম করছেন ছোট ভাইকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। ভাইকে বিয়ের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে তিনি ১২ বছর লড়াই চালিয়ে একটি ফ্ল্যাট এবং রেস্টুরেন্ট করে দিয়েছেন। পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশের ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর অভিজ্ঞতা এবং লড়াইয়ের গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আলোড়ন সৃস্টি করেছে ।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, ছোট ভাইয়ের জন্য বাড়ি এবং গাড়ি কিনতে ওই নারী নিজের ভবিষ্যতকে আটকে রেখেছেন। নিজের বিয়ে নিয়ে তিনি ভাবছেন না। তার লক্ষ্য, দেশের কোনো ভালো জায়গায় তার ভাইকে প্রতিষ্ঠিত করে বিয়ে দেওয়া। চীনা প্যানকেকের একটি ছোট দোকান তার আয়ের উৎস।ওই নারী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনি নিজের জন্য বাড়ি কেনার কথা ভাবেননি। কারণ ভবিষ্যতে তা তিনি করতে পারবেন। তবে ছোট ভাইয়ের জন্য ভাবছেন কেননা তার বাবা-মা ভাইয়ের সঙ্গে থাকবেন। তিনি ১৯ বছর বয়সে চাইনিজ প্যানকেক বানাতে শেখেন। তার মাসিক আয় সাড়ে ১৩ হাজার মার্কিন ডলার।
তিনি আরও বলেন, গত চার বছর বা তারও বেশি সময় ধরে তিনি নিজের জন্য নতুন জামাকাপড়ও কেনেননি। নিজের বিয়ের কথা ভাবেননি। তার মতে, এখন নিজের বিয়ে নিয়ে ভাবার সময় নয় কারণ তিনি তার ভাইয়ের ভবিষ্যতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ঐতিহ্যবাহী চীনা রীতি অনুযায়ী, বিয়ের জন্য চীনা পুরুষদের নববধূকে বিপুল পরিমাণ উপঢৌকন দিতে হয়। এজন্য ব্যয় হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। ওই নারীর এমন কর্মকাণ্ডে অনেকে সমালোচনা করেছেন। তবে তিনি তা পাত্তা দেননি।
ওই অন্তঃপ্রাণ এই বোন বলেন, “প্রত্যেকের জীবন আলাদা। নেতিবাচক সমালোচনাকারীদের শৈশবে আমাদের মতো কষ্টের অভিজ্ঞতা না-ও থাকতে পারে। তারা আমার সংগ্রাম বুঝবেন না।” তবে,ওই নারীর এই কাজকে দেশটির অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী খুব একটা ভালোভাবে নেননি। সমালোচকরা বলেন, “তিনি তার ভাইকে যত বেশি দেবেন, তার ভাই ততবেশি নেবেন।”
বিয়ের ক্ষেত্রে চীনা সমাজ লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতার সাথে লড়াই করছে। এই লড়াইয়ে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে আছেন নারীরা।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০২ডিসেম্বর- ২০২২/ মওম