বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নাড়ির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে:পররাষ্ট্রমন্ত্রী

0
215

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাদের উভয় দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা মোটামুটি একই রকম। সেদিক থেকে আমাদের নাড়ির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি, গোষ্ঠী সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে মানুষ হচ্ছে সব থেকে বড়– এতে আমরা বিশ্বাস করি।

৩ ডিসেম্বর শনিবার আসামের শিলচরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এনআইটি) ভারতরত্ন ড. এ পি জে আব্দুল কালাম লার্নিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু গার্ডেন উদ্বোধন করা হয়েছে। এদিন সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি এবং এনআইটি শিলচরের ডাইরেক্টর প্রফেসর রজত গুপ্ত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু গার্ডেন’ উদ্বোধন করেন। পরে সেন্টারের ভূপেন হাজারিকা অডিটরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে ড. মোমেন এই কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে তোলার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ভারত সরকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ডিজিটাল লাইব্রেরিতে মুজিব কর্নার স্থাপন করায় এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের সংগ্রাম, তাঁর আদর্শ ও স্বপ্ন সম্পর্কে আরও বেশি জানার সুযোগ সৃষ্টি হলো। একইসঙ্গে তারা বাংলাদেশের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এবং ভারত সরকার কীভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে সেগুলোও জানতে পারবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে সেসব তথ্যও তারা জানার সুযোগ পাবে।

এনআইটি, শিলচরে স্থাপিত মুজিব কর্নারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তার লিখিত এবং সম্পাদিত বঙ্গবন্ধু,  বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন বিষয়ক কিছু বই উপহার দেন। মুজিব গার্ডেন উদ্বোধনের পর সেখানে তিনি গাছের চারা রোপণ করেন। ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য আসামের কাছাড় জেলার শিলচর পুলিশ গ্রাউন্ডে আয়োজিত দুইদিন ব্যাপী (২-৩ ডিসেম্বর) শিলচর-সিলেট উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রথমবারের মতো আয়োজিত শিলচর-সিলেট উৎসবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার সকালে সড়ক পথে সিলেটের শেওলা সীমান্ত দিয়ে ভারতের সুতারকান্দি আইসিপিতে পৌঁছালে সেখানে ভারতের বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান। পরে তারা আসামের শিলচরে পৌঁছান।

ভারতের সঙ্গে বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থান, ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক বন্ধন, ভাষা, শিল্প-সাহিত্য, রন্ধন ঐতিহ্য ও দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের মতো বহুবিধ কারণে দুই দেশের সুসম্পর্ক পর্যায়ক্রমে আরও সুদৃঢ় হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি কার্যকরভাবে প্রয়োগের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে সার্বিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে যা ভারতীয় নেতৃত্বের দ্বারাও স্বীকৃত ও প্রশংসিত হয়েছে।  ড. মোমেন বলেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারলে দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে।

অনুষ্ঠানে অপর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতি, পর্যটন ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি; সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাম সরকারের পরিবহন, আবগারি এবং মৎস্য মন্ত্রী পরিমল শুক্লাবইদ্য এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিজোরামের গভর্নর কম্ভামপতি হরি বাবু।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যান্যের মধ্যে মহিবুর রহমান মানিক এমপি, ইকবালুর রহিম এমপি, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সিলেটের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ০৩ ডিসেম্বর– ২০২২/ মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here