মোটরসাইকেল বিক্রির টাকায় ৪০০ ফিট দৈর্ঘ্য জাতীয় পতাকা

0
253
প্রতিনিধি, মুক্তাগাছা: 
মোটরসাইকেল  বিক্রির টাকায় ৪০০ ফিট  দৈর্ঘ্যের  জাতীয়  পতাকা টাঙালেন ময়মনসিংহ সদর এবং মুক্তাগাছা উপজেলা সিমানাবর্তি এলাকা কুষ্টিয়া কাবারিকান্দা গ্রামের আঃলতিফ (৩২) নামের এক যুবক।
ফুটবল বিশ্বকাপ  উপলক্ষে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের মানুষ যখন জমি বিক্রি ও নিজের জমানো  টাকা দিয়ে তাদের  প্রিয় দল ব্রাজিল,আর্জেনটিনা, জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগলের মতো জনপ্রিয় দেশের পতাকা টাঙানোতে  ব্যস্ত  ঠিক সেই মুহুর্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এবং নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসায় তার চলাচলের একমাত্র বাহন মোটরসাইকেল বিক্রি করে, সেই টাকা দিয়ে ৪০০ ফিট দৈর্ঘ্যের  বাংলাদেশর জাতীয় পতাকা টাঙিয়েছেন আঃ লতিফ। জাতীয় পতাকার লাল অংশে আঁকা আছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলা সিমানাবর্তি এলাকা কুষ্টিয়া কাবারিকান্দা গ্রামের মৃত আঃ খালেক এর ছোট ছেলে আঃ লতিফ। পারিবারিক দরিদ্রতার কারণে এস.এস সি পাস করার পর বড় ভাই মোঃ মোজ্জাম্মেল হকের  সাথে কাঠ মিস্ত্রির কাজে যোগ দেন।
আঃ লতিফ বিদ্যাগঞ্জ বাজারে কাঠমিস্ত্রীর দোকানে কাজ করেন। বাড়ি থেকে
বিদ্যাগঞ্জ বাজারে নিজ কর্ম স্থলে চলাচলের জন্য ৩ বছর পূর্বে বড় ভাই নিজের জমানো টাকা এবং আশা ব্যাংক থেকে ৮০০০০ হাজার টাকা লোন করে TV’S -100cc একটি মটর সাইকেল  কিনেদেন। সেই মটর সাইকেলটি ৪৭০০০ হাজার টাকা বিক্রি করে দেন। বিক্রির সেই টাকা দিয়ে তৈরি করেন ৪০০ ফিট দৈর্ঘ্য   জাতীয় পতাকা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আঃ লতিফ বলেন, মুজিব শতবর্ষে আমার এ কাজটি করার ইচ্ছাছিলো কিন্তু করোনা এবং বিভিন্ন বাধাবিপত্তির কারণে আমার এই ইচ্ছাটি পূর্ণ করতে পারিনি। ফুটবল বিশ্বকাপ  উপলক্ষে বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশকে ভুলে  জমানো  টাকা দিয়ে তাদের  প্রিয় দল ব্রাজিল,আর্জেনটিনার  মতো জনপ্রিয় দেশের পতাকা টাঙানোতে বেস্ত হয়ে যায়। তা দেখে আমার ভালো লাগে না। তাই  সবাইকে দেশের প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে এবং বিজয় মাস উপলক্ষে  আমি  মটর সাইকেল বিক্রি করে আমার দেশের জাতীয় পতাকা তৈরি করি এবং  পহেলা ডিসেম্বরে টাঙিয়েদেই। বিজয়ের পুরো মাস  ব্যাপী  জাতীয় পতাকাটি টাঙানো থাকবে। ১৬ ডিসেম্বরে পুরো রাস্তা ফুল ও লাল সবুজ বাতি জ্বালিয়ে বিজয় দিবস পালন করবো এবং সারাদিন সাউন্ড সিস্টেমে বাজানো হবে বঙ্গবন্ধু ভাষন ও দেশাত্মবোধক গান।
বড় ভাই মোঃ মোজ্জাম্মেল হক( ৩৫) বলেন, লতিফের ছোট থেকে দেশের প্রতি ভালোবাসা অনেক। কিছুদিন আগে যখন খড়ায়  পানির অভাবে  ধান চাষ করতে পারছিলোনা গ্রামর কৃষকরা, তখন আমার ছোট ভাই, আমার সেচ পাম্পে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙিয়ে সকল দরিদ্র কৃষকদের চাষাবাদ করার জন্য বিনা মূল্যে সেচের পানি দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন (৭৫) বলেন, অনেক কষ্টের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি। আমাদের এই লাল সবুজের জাতীয় পতাকা।    আমি সবাইকে দেখি নিজের দেশের জাতীয় পতাকা বাদ দিয়ে বিনদেশী পতাকা লাগায়।   দেশ প্রেমি আঃ লতিফ নিজের সখের মোটরসাইকেল বিক্রি করে এত বড় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে সবাইকে দেশ প্রেমে উৎজীবিত করার জন্য যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এর জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৫ ডিসেম্বর– ২০২২/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here