প্রতিনিধি,খানসামা (দিনাজপুর):
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন মাঠ যেন হলুদের মেলা বসেছে । উপজেলার ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে এখন চোঁখ জুড়ানো হলুদ রংয়রে সমাহার । দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে ওই রংয়রে উৎসব এনে দিয়েছে সরষে ফুল। যা প্রকৃতিতেও ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। এ রংয়ের মেলায় যেন প্রকৃতি তার আপন খেলায় বড়ই ব্যস্ত সময় পার করছে। সরষে ফুলের ধারদিয়ে হেঁটে চলা কৃষান-কৃষাণী অথবা শিশুর দল অন্যরকম চিত্র সৃষ্টি করছে। উপজেলার আলোকঝাড়ি, ভেড়ভেড়ী, আঙ্গারপাড়া, খামারপাড়া, ভাবকি ও গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ সেঁজেছে অপরুপ সাঁজে। দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে সরষে ফুলে মোড়া ক্ষেতগুলো। মৌমাছির দল এবং প্রজাপিত সরষে ফুলে পাখা মেলে মধু আহরণ করছে। ছবি তোলার লোভ সামলাতে না পেরে শীতের সকালে অথবা পড়ন্ত বিকালে সরষে মাঠে গিয়ে, হলুদের মাঝে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে ছবিও তুলছেন অনেকে। হলুদ রংয়ের মাঝে তোলা ছবি গুলো যেন প্রাণে দোলা দেওয়ার মত।
চলতি বছরে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বিভিন্ন গ্রামের সরিষা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদন হবে। সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর। চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২১০ হেক্টর জমিতে। এর স্থলে চাষ হয়েছে ১৪৬৫ হেক্টর জমিতে। গত বছরেও ৯৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হয়েছিল চাষীরা। ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের দলবাড়ী গ্রামের কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সরবোচ্চ ৪-৫হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩-৪হাজার টাকা করে। প্রতি বিঘাতে ৭-৮মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১০-১২ হাজার টাকা লাভ করা যায়। এ ছাড়া সরিষা চাষে তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না।
খামারপাড়া ইউনিয়নের কায়েপুর গ্রামের সরিষা চাষীরা জানান, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর ৪/৫বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। তবে এবার ৬/৭বিঘা করে জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ২৫-৩০ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারব। সরিষার তেলে রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। আর সরিষার খৈল জমির উরবরা শক্তি বৃদ্ধি করে। এবিষয়ে খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা স,ম জাহেদুল ইসলাম জানান,কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করনের মাধ্যমে সরিষার চাষে অধিক আগ্রহ বাড়ানো হয়েছে রবিশস্য চাষের এবার অনুকূল পরিবেশ ছিল। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পেলে মানুষ সরিষা আরও বেশি করে আবাদ করবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় জানান, তেল জাতীয় ফসলের চাষে এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া সরিষা চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ বছর তারা বেশি জমিতে সরিষা চাষ করছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ ডিসেম্বর– ২০২২/মওম