১. ভালোলাগার আত্মহুতি
টেলিফোনে বেজেই চলছে রিং
ক্রিং
ক্রিং
ক্রিং
জাগ্রত তবুও সে
মৃতের মতো দেহপাঠের বিতর্কিত দায়ে
পিঠ ঠেলে বসে ছিলো অনন্যোপায়ে।
কিছু কথা বারবার ফিরে আসে হারায় অকারণ
সভ্যতার সৌরচূঁড়া ভেঙে পড়ার বিবরণ
যদি তুলে দিই চলতি ধারায়
ভূমিতে বা হাওয়ায়!
দেখবে প্রেমের প্রাচীর ভেঙ্গে জমেছে শুধুই ইট
তা দিয়ে নতুন কিছুই যাবে না গড়া, আনফিট।
অমোঘ ক্রান্তির অস্বস্তিতে ভেবে বসেছ যে ভুল
সে তো আমি, ছাদের টবে বিলেতি মৌসুমী ফুল
কেদ, শ্রান্তি, বিষাক্ত বেঁচে থাকার প্রতিনিয়ত দায়ে
বেড়ে উঠেছিলাম আদর-অযতনে, প্রণয় ও ঘায়ে।
জেনে নিও-
ধূসর মোড় আর আলো-আঁধারি পেরিয়ে
যে আসে বেড়িয়ে
অনমনীয় বুকে দেয় টোকা
সে ই সত্য
স্নায়ুতন্ত্রের কলাকোষে যার
রয়েছে জন্মগত অধিকার।
আবারো টেলিফোনে বেজে ঊঠছে রিং, ক্রিং, ক্রিং কাট…
২. অনুরাগে আত্মহুতি
চিঠি লিখবে না জানি, তবু করি টেলিফোন
হয়তো জেনেছো কেউ একজন করেছে স্মরণ
যেন ভিসিগথদের সাথে হুনদের দখল অভিযান।
দানিয়ুব তখন উত্তাল
সাগরেও ঘন জল–
ধ্বংস্তূপে পরিণত সমগ্র ইউরোপ
তখনই ধর্ম নিয়ে সঙ্গী হন পোপ।
নীরবতা একাই পুড়ে
এভাবে কেউ হাটে দূরে-
ভেবেছ আমি বুঝি বারবার জিতি
সচল দুর্র্ধষ হলেও সে-ই তো গতি
নীরবতা অতীত মন্থনে খুঁজছে সঙ্গতি,
অনৈক্য কি এনেছিল
বাইজেন্টান সাম্রাজ্যের বৈভব!
রাষ্ট্র জুড়ে ছিল কি
নদী আর পাখির কলরব!
এসব মেনে নিয়েই শিখেছি চিত্রকলা ও সংগীত
সেদিন পৈতা দেহে হেঁটে এসেছিলেন পুরোহিত
শুরুর কথাটা বলি
হাতে তোমার পদাবলী
উত্তপ্ত মরুর বালি–
মরুঝড়ে দিশেহারা উট দিকবিদিক
আলোর সন্ধান দিতে এসেছিলেন যিনি
ফোরাতের স্রোতে আর হেরা গুহার ধ্যানে
তুমিও নিয়েছিলে মেনে
আমিও মানি সাবধানে–
স্পর্শ বড়ই ভয়ঙ্কর ছোপ ছোপ ফেলে দাগ
শীতল জলে যতই ধুবে বেড়ে যাবে উত্তাপ।
চেয়েছিলাম ছবিতেই জুড়ে দেবো প্রাণ
খুলে খুলে মিলিয়ে নিয়েছি নষ্ট অভিধান
মন্দিরা একতারা ও তবলার বোলে
তুমি হেসেছিলে, জল উঠেছিল দুলে
না ভেবে অন্ধকারে আলোতে দিয়েছি ডুব
আনন্দ আর মাতাল উত্তাপে তুমি নিশ্চুপ!
কত আর কুয়াশা চারপাশে
আসবেই সূর্য ধোয়া দিন,
চিঠি লিখবে না জানি!
না হয় বাড়-ক কিছু ঋণ।
৩. সবটুকু আত্মহুতি
টেলিফোন ভাইব্রেশনে, তুমি নিমগ্ন ধ্যানে
তোমার কাব্যিক চলন যেন এক গল্পের সংকলন।
তবুও আমার দীপপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছিলে
বৌদ্ধিক নক্ষত্রের দিকে তাকিয়েছিলে
নিরাপদ দূরুত্ব রেখে বুনেছিলে
ভালোবাসার মানচিত্রের আদলে
অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিলো তোমার ক্যাপ্টেন
তাই রক্তাক্ত গল্পের শিল্পিতরূপ করিনি নির্মাণ
আমার সাজি ভরা সবগুলো ফুল
দেখে একবাক্যে বলেছিলে, ‘বকুল’
সেদিনও পাঠ-প্রচেষ্ঠা নিবেদিত ছিলো
আর সবই ছিলো তোমার অনুকূল।
তোমার প্রসারিত অঙ্গ ছুঁয়ে দেখেছি
সঙ্কুচিত অঙ্গে রেখেছি সরলতার স্পর্শ
এখনো স্বাভিমানে
কিঞ্চিত আহবানে
কিঞ্চিত পূর্ণতায় করছে কম্পন
যেমন টেলিফোনের ভাইব্রেশন।