মোঃ নুরুজ্জামান সবুজ:
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ জানুয়ারি উৎসব মুখর পরিবেশে নতুন বই বিতরণ করা হলেও সব শ্রেণির সকল বই বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। প্রাক প্রাথমিক উপকরণ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সকল বিষয় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে একটি বিষয়, পঞ্চম শ্রেণির তিনটি বিষয় বই বিতরণ করা হয়। শিক্ষক সংকট লেগেই আছে। ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৫৪ টি। অবসর ও মৃত্যুজনিত কারণে এবং সরাসরি নিয়োগ না থাকায় এতো পদ শূন্য হয়ে রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকেরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশপাশি পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যবহত হচ্ছে।
উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌরসভা এবং ৬টি ইউনিয়নে ৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক নেই ২৩ টিতে। আর সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য ৫৪টি। এ সব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষক সংকট নিয়ে ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি অনেক ক্লাশ নিতে হয়। আবার প্রধান শিক্ষক না থাকলে সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এতে দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে ঠিকমতো ক্লাশ নিতে পারেন না। সব মিলিয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুদে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার পরমানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান সবুজ জানান, ‘আমার বিদ্যালয়ে দুইজন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি আমাকেও পুরোদমে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ৪জন শিক্ষক মিলে পাঠদান করাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা।’
করতকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কানিজ ওয়ারেসি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে একজন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন আমাকে ৫টি ক্লাস নিতে হয়। বিদ্যালয়ে দুজন শিক্ষক নেই। এতে ঠিক মতো না হয় দাপ্তরিক কাজ, না হয় পাঠদান।’
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরাত আলী বলেন, ‘শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। শিগগির শূন্যপদগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন কে বলেন, ‘উপজেলায় ২৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও ৫৪টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। বিষয়টি চিঠি দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে এই সংকট কেটে যাবে। নতুন বই আসা মাত্র বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।