আব্দুল সাত্তার টিটু:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, হামলা, মামলা এবং নেতাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আন্দোলনের গতিরোধ করা যাবে না। দেশের মানুষের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এই আন্দোলন। এই আন্দোলনের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের হাতে।
তিনি ৬ জানুয়ারী শুক্রবার বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ১১ জানুয়ারী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচী সফল করার লক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চেয়েছিল বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বিশৃঙ্খলা করে দমিয়ে রাখতে। বিএনপি সেটি পরাহত করেছে। রাজনৈতিকভাবে তাদের পরাজিত করেছি আমরা। ১১ জানুয়ারী গণ অবস্থান কর্মসূচি থেকে একইভাবে শক্ত বার্তা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে বার্তা যাবে, এই সরকারের বিদায় নেওয়ার জন্য। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি সেই ধারায় চলতে থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে চাই। তারা যদিও সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু কেউ জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা সেই শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান আগের অনুষ্ঠান থেকে বড় হয়। প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে সেভাবে। ঢাকায় ১০ তারিখের জনসভায় যে পরিমাণ মানুষ হয়েছে। পরের ৩০ তারিখে এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়েছে।কারণ দুটিতেই আমি ছিলাম। একটা ছিলো ৫ কিলোমিটার জুড়ে মানুষ। মতিঝিল থেকে মগবাজার পর্যন্ত সব মানুষ হয়েছে। গণঅবস্থান কর্মসূচিতে আমরা দেখিয়ে দিতে চাই।
আমির খসরু বলেন, কর্মসূচিকে অনেকে হালকা অনুষ্ঠান হিসেবে দেখে। এবারের অবস্থান কর্মসূচি ব্যতিক্রম করতে চায়। কারণ এটি শেখ হাসিনা পতনের কর্মসূচি। যদিও কর্মসূচিটি হবে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে শক্ত বার্তা দিতে চাই। পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের সভায় কী হয়েছে সবাই জানে। ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে নিয়ে কিছু করতে পারে না। জনগণকে প্রতিহত করতে মাস্তান দিয়ে চেষ্ঠা করছে। কিন্তু তারা পারবে না, পরাজিত হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমার দল কর্মী নির্ভর দল। অপেক্ষা করছি ওবায়দুল কাদের কখন লুঙ্গি ফেলে চলে যায়। আর দুয়েকটা মিটিংয়ের পর তাদেরকে চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। তারা আসলে চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি হবে, সেজন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবো।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় দলনেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আমরা যে আন্দোলনে নেমেছি, এরমধ্যে অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। রক্তের এই প্রতিশোধ আমরা নেব। আগামী ১১ তারিখ সফল করার মধ্যে দিয়ে একটা বার্তা দিতে চাই, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে এই সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। আন্দোলন আমরা অনেকদিন করে আসছি। এবারে চূড়ান্ত আন্দোলন করে সরকার পতন করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক বলেন, সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা, জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের পরোয়ানা জারি করেছে। কিন্তু তারেক রহমানের সম্পদ হচ্ছে দেশের মানুষের সম্পত্তি। এই সম্পদ ক্রোক করতে হলে দেশের সব মানুষের সম্পত্তি ক্রোক করতে হবে। সবাইকে জেলে নিতে হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডের মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির জনসভাকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মহাসমুদ্রে পরিণত করেছিলাম। আগামী ১১ জানুয়ারীর গণ অবস্থান কর্মসূচিও জনসমুদ্রে পরিণত হবে। চট্টগ্রাম বিএনপির দুর্ভেদ্য ঘাটি। চট্টগ্রামের প্রতিটি কর্মসূচি সফল হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপির বর্তমান কর্মসূচিগুলো হচ্ছে বিদেশে টাকা পাচারকারী ব্যাংক লুটেরা, মানুষের মৌলিক অধিকার ও ভোটের অধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে। বিএনপি জনগণকে নিয়ে মাঠে নেমেছে তাই আওয়ামিলীগের মাথাব্যাথা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী লীগ গত দেড় দশকে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে তা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের এখন মেরামতের প্রয়োজন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে মেরামত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা দেশের ভোটার অধিকার চিনিয়ে নিয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলনেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, উপজাতি সম্পাদক ম্যা মা চিং, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, সহ গ্রাম সরকার সম্পাদক বেলাল আহমদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য উদয় কুসুম বড়ুয়া, মশিউর রহমান বিপ্লব, আবু তালেব, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দিপন তালুকদার, নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুর রহমান, উত্তর জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিম, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বান্দরবন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০৭ জানুয়ারি -২০২৩/মওম