আব্দুল সাত্তার টিটু:
কক্সবাজার জেলা সদরের কলাতলী এলাকায় পৈত্রিক এবং ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমি দখলে আসা সন্ত্রাসীদের পাহারা দেয়ার সময় ওয়ারেন্ট ছাড়াই উল্টো পুলিশের হাতে আটক হয়েছে জায়গার প্রকৃত মালিক পক্ষের ৫ নারী।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়ের মসজিদের পেছনে মালিকানাধীন জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে এনাম বাহিনীর লোকজন। এই খবরে দখলবাজদের পাহারা দিচ্ছিলো ভুক্তোভোগী জমির প্রকৃত মালিকরা।
এদিকে ১১ জানুয়ারি বুধবার রাত আনুমানিক ১ টায় দখলবাজদের পক্ষের লোকজন সসস্ত্র অবস্থায় এসে আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা মার্কেটের গেইট খুলতে আসলে জায়গার প্রকৃত দাবীদাররা বাঁধা প্রদান করে এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের কথা কাটাকাটির সময় জায়গার মালিক পক্ষের পাহারায় থাকা ৫ নারীকে বিনা ওয়ারেন্টে প্রভাবশালী মহলের ইশারায় কোন অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া জায়গা ভুমি দস্যু এনাম গং সশস্ত্র অবস্থায় আসলেও পুলিশ সন্ত্রাসীদের থামানোর চেষ্টা না করে সেখানে উল্টো ভুক্তভোগী ওয়ারিশ সম্পত্তির প্রকৃত মালিক পরিবারের সদস্যদের আটক করায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ পুলিশ আটক করলে উভয় পক্ষের লোকজনকে আটক করবে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে শুধুমাত্র মালিক পক্ষের লোকজনকে আটক করেছে। এর ফলে দখলবাজরা সহজের অবৈধভাবে ওই জায়গা দখল করতে পারবে। আটকরা হলেন শহরের বাহারছড়ার বুলবুলি, ফারজানা, শামসুন্নাহার, সিমি, সাজেদা বেগম।
ভুক্তভোগীদের দাবি-ঝিলংজা মৌজার খতিয়ান নং ১৭৫১ দাগের ২০০৩৫ দাগের পূর্বে ২০০৩৩, পূর্বে ১০ শতক ২০০৩২ দাগের পূর্বে ৭ শতক ২০০২৯ দাগের পূর্বে ৫ শতক এবং ২০০০৩ দাগের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ৭০ শতক এবং সর্বমোট জায়গার পরিমাণ ১.০২ একর। ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি বর্তমানে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে মামলা বিচারাধীন। যার নং অপর ৭৯১/২১। জায়গাটির মুল মালিক, শফিকুর রহমান (শফিক আহমেদ), আহমেদ হোসেন, ঠান্ডা মিয়া। সর্ব পিতা, ফজলুর রহমান দক্ষিণ বাহারছড়া, ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ড কক্সবাজার।
উক্ত ব্যক্তিদের মালিকানাধীন জায়গা ঠান্ডা মিয়ার সন্তানেরা এককভাবে ওয়ারিস সনদ ছাড়া, কাগজের গুঁজামিল করে ৩ নং ওয়ার্ডের (চাউল বাজার) মৃত মুহাম্মদ আলী চৌধুরীর পুত্র ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর এবং মোঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পিতা, মৃত নজির আহমেদ, বড়হাতিয়া লোহাগাড়া চট্টগ্রাম’র সাথে গোপনে দুই দলিলে ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় বায়না চুক্তিনামা করে।
ঠান্ডা মিয়ার সন্তানেরা হলেন, আবদুল ছবুর চৌধুরী, আবদুল গফুর, এনামুল হক, হোসনে আরা বেগম, রওশন আরা, মোঃ রাসেল। বর্তমানে উক্ত জায়গায়, মার্কেট নির্মাণ অব্যাহত আছে এবং কতিপয় ব্যক্তি সশস্ত্র লোকজন নিয়ে পাহারা দিচ্ছে।
এদিকে উল্লেখিত জায়গায় সকল ধরনের কাজ বন্ধ রাখতে গত ৩ অক্টোবর ৯ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী কাঃ বি ১৪৪ ধারামতে একটি আবেদন করেন প্রথম পক্ষ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তুু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তি প্রশাসনের মদদে দিনে এবং রাতে সমানতালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় দুপক্ষের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এতে যেকোন মুহুর্তে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
পাঁচ নারীকে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের আটক করা হয়েছে। কোন ওয়ারেন্ট ছাড়া তাদের কেন থানা হাজতে রাখা হয়েছে জানতেই চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। উভয় পক্ষকে না ধরে ভুক্তভোগীদের আটক করা হলো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন- ঘটনাস্থলে যাদের পেয়েছি তাদের আটক করেছি ।