কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ কলেজের ডিগ্রী, অনার্স ১ম ও ২য় বর্ষের পরীক্ষার কেন্দ্র বাতিল

0
294

জি এম রাশেদুল ইসলাম:

কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়ম বহির্ভূত পদ দখল, অনিয়ম, অসদাচরণ ও স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।

কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস ছালাম এর নিয়ম বহির্ভূত পদ দখল, অনিয়ম, অসদাচরণ এবং স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত ৪ জানুয়ারী ২০২৩ ইং সকাল ১১ টায় কলেজের শিক্ষক কমনরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম শহরে অবস্থিত মজিদ আদর্শ ডিগ্রী কলেজটি দীর্ঘ ০৩ (তিন) যুগের বেশি সময় ধরে শিক্ষা বিস্তারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছে। গত বছরের ১৮ জুন নিয়মিত অধ্যক্ষ অবসর গ্রহণের পর সভাপতির পছন্দের ব্যক্তি জনাব আব্দুস ছালাম কে সিনিয়র শিক্ষকের অনাপত্তিপত্র না নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে বসিয়ে ছিলেন। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি পরিপন্থী। অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর বিধি মোতাবেক ০৬ মাসের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার শর্ত থাকলেও তা অমান্য করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সভাপতির সাথে লিয়াজোঁ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। উল্লেখ্য যে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মেয়াদের শেষের দিকে অধ্যক্ষ নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন না করে বরং সভাপতিকে সন্তষ্ট করার জন্য একজন অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ রয়েছে যে, কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপিত্ প্রকাশিত হয়েছে তা খুজে পাওয়া যায় নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা গণমাধ্যমে অবগত হয়েছি যে, গভর্নিং বডির সভাপতি সভাপতিত্ব করতে যে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার কথা তা নেই। অর্থাৎ তার ডিগ্রী পাস সার্টিফিকেটটির সঠিকতা নিয়ে জনমনে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে (সুত্র: দৈনিক শিক্ষা ও বাংলা ট্রিবিউন)। এমতাবস্থায় সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের যোগসাজোসে অত্যন্ত গোপনভাবে অফিস সহায়ক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়ম বহিভূত ভাবে ০৬ মাসের পরেও বহাল তবিয়তে পদ দখল করে কলেজ পরিচালনার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এছাড়াও বেশ কিছু অভিযোগ আপনাদের মাধ্যমে তুলে ধরছি: নন এমপিও শিক্ষকদের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বেতনসহ মোট ০৬ মাসের বেতন বকেয়া থাকায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্বেচ্ছাচারীতা এবং শিক্ষক/কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ সহ বিএমটি পরীক্ষা কমিটিতে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, অনার্স শিক্ষকদের ইনক্রিমেন্ট বাতিল সহ এইচএসসি বিজ্ঞান শাখার ব্যবহারিক পরীক্ষার জন প্রতি ৩৬০/- টাকা করে প্রায় ৩০০ (তিনশত) জন শিক্ষার্থীর লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করছি। কলেজে ৮০ জনের অধিক শিক্ষক থাকার পরেও হাতে গনা কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে পকেট কমিটি গঠন করে স্বেচ্ছাচারীতার আশ্রয় নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অদূরদর্শিতা ফলে ডিগ্রী পাসকোর্স এবং অনার্স ১ম ও ২য় বর্ষের কেন্দ্র বাতিল হয়েছে, ফলে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ্য করা হয়েছে অর্ধ দিবসে কলেজ চালু থাকলেও সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে শ্রেণি কক্ষে উপস্থিতি একে বারেই শুন্য। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অত্র কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি সহকারী অধ্যাপক রাম গোপাল সরকার, সিনিয়র শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক আনিছুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার রায়, সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ, সহকারী অধ্যাপক মোহসীন আলী, সহকারী অধ্যাপক সাজু মিয়া, সহকারী অধ্যাপক মেহেরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জয়তী রুদ্র, প্রভাষক আতিকুর রহমান, সহকারী গ্রন্থগারীক গৌত কুমার নায়েক রায়, অফিস সহকারী রিয়াজুল ইসলাম, নুরুজ্জামান বাবু প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৪ জানুয়ারি -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here