এনজিওর অপকর্ম সীমা ছাড়িয়ে 

0
210
মুঃ আনিছুল হক ক্লিপটন:
দেশের সরকারের প্রথম কাজ জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া , সরকার প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনা তাই সরকার এনজিওর মাধ্যমে প্রতিটা জনগণের কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করে , এবং সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে নীতিমালা নির্ধারণ করেছে , কি কি নীতির উপরে বঞ্চিত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার পূরণ করা যায় , প্রতিটা সরকার ঠিক সেই রকম ভাবেই বঞ্চিত নাগরিকদের উপকারে কাজ করেছে , বর্তমান সরকারও বঞ্চিত নাগরিকের অধিকারে জোরালো ভাবে কাজ করছে , এখন ব্যাপার হচ্ছে সাধারণ নাগরিক বা বঞ্চিত নাগরিকরা সেই  সুযোগ সুবিধা কতটা পাচ্ছে ?
এনজিও
‌সরকার বঞ্চিত মানুষের উপকারের জন্য বিভিন্ন এনজিও বা সেবা দানকারী অলাভ জনক প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন করেছেন , সরকার যেহেতু প্রতিটা নাগরিকের কাছে পৌঁছতে পারছে না সেহেতু বিভিন্ন এনজিও বা অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন করেছেন যাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিটা   বঞ্চিত নাগরিকের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সেবা দিয়ে একটি মজবুত অর্থনীতি এবং শক্তিশালী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারে , নারী অধিকার সু প্রতিষ্ঠিত করতে ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে , কিন্তু এনজিওগুলি কি আসলে সেবা দান করছে ? ওরা কি আসলেও অলাভ জনক প্রতিষ্ঠান ? সবাই খারাপ না তবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যেই ২-১জন থাকে কুলাঙ্গার যারা পুরো জনগোষ্ঠীটার বদনাম ছরায় , যাদের কারণে পুরো জনগোষ্ঠীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয় , ঠিক তেমনি কিছু এনজিওর কারণে পুরো এনজিও জনগোষ্ঠীর দুর্নাম হচ্ছে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে ।
এনজিওঋণ প্রকল্প
‌একটি এনজিও অনেক রকমের সেবা প্রদান করে , যখন যে সেবা প্রদান করে তখন সেটি একটি প্রকল্প আকারে বাস্তব রূপ দিয়ে তারপরে তারা সেবা প্রদান করে , এনজিওর এই প্রকল্পগুলির মধ্যে  দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির একটি  , যারা মাইক্রোক্রেডিক বা ঋণ প্রকল্পের কাজ করে , এই কাজগুলি যারা করে তাদের অধিকাংশ রাই বিভিন্ন রকম দুর্নীতি সন্ত্রাস অনিয়ম নারী অধিকার খর্ব এর সাথে লিপ্ত , যেখানে সরকার নারী অধিকার বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ , দারিদ্র্য বিমোচনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ , মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ , সেখানে এনজিও গুলি সেই  প্রতিজ্ঞা রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনুমোদন এনে তারা খর্ব করছে নারী অধিকার , খর্ব করছে নাগরিক অধিকার, সৃষ্টি করছে সন্ত্রাস চাঁদাবাদ জাকিনা সত্যিই উদ্বেগ জনক ,
বঞ্চিত নাগরিক
‌বঞ্চিত নাগরিকরা বা অবহেলিত নাগরিকরা তারা একটু শান্তিতে বাঁচার জন্য এনজিওর দ্বারস্থ হয় , দু’মুঠো খেয়ে পরিবার সন্তান নিয়ে একটু বেঁচে থাকবে এই আশায় এনজিওর দ্বারস্ত হয় , আর এনজিও গুলি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেয় , বঞ্চিত নাগরিকের সর্বস্ব কেড়ে নেয় , দারিদ্র্য বিমোচনের নামে সমাজে সৃষ্টি করেই চলেছে দারিদ্রতা , নাগরিক অধিকার পূরণের নামে কেড়ে নিচ্ছে তাদের মান ইজ্জত সহায় সম্বল ।
ভুক্তভোগী
‌সুবিধা বঞ্চিত নাগরিকরা দু’মুঠো খেয়ে বাঁচার আশায় ঋণ নিচ্ছে বিভিন্ন এনজিও থেকে , বুকে অনেক বড় আশা নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখে খুব সুন্দর ভাবে পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করার , এই স্বপ্নটা দুঃস্বপ্ন হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ফিরে আসে তাদের কাছে । মিরপুর ঃ- (নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক) *মর্জিনা ঋণ নিয়েছিল ৪০ হাজার টাকা , ১১ মাসে কিস্তি শোধ করতে হবে , ২২ কিস্তি দেয়ার পর একটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয় , কারণ তার স্বামী কাঁচামালের ব্যবসা করত , ব্যবসায় ক্ষতি হয় তাই সে কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয় মাত্র একটি কিস্তি , একটি কিস্তির জন্য তাকে শুনতে হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ , এরকম ভাবে লাঞ্ছিত হয়েছে যারা , আনারকলি ,বেবি আক্তার এরকম আরো অনেকেই । দারুস সালাম (বৃহত্তর মিরপুর) মোনালিসা তার স্বামী একটি চার দোকান চালায় , ঋণ নিয়েছিল পঞ্চাশ হাজার টাকা , ১৬ কিস্তি দেয়ার পর মোনালিসার স্বামী অসুস্থ হয়ে যায় তাই দুইটি কিস্তি দিতে পারে নাই , মোনালিসার বাসায় রাত সাতটার সময় ৭-৮ জন প্রবেশ করে গালিগালাজ করে আশেপাশের মানুষকে ভিড় জমে যায় তাদের মান ইজ্জত নষ্ট হয় , নিরুপায় হয়ে টিভি বিক্রি করে একটি কিস্তি পরিশোধ করে তাৎক্ষণিকভাবে , এই কাতারে আরো যারা আছে ,বিবি আছিয়া *শাহিনুর ,বেবি রহমান ,নাজিয়া , আরো অনেকেই । পল্লবী (বৃহত্তর মিরপুর) ঃ- শ্যামলী তার স্বামী রিক্সা চালায় , ঋণ নিয়েছিল ৪০০০০ টাকা , পরপর দুইটি রিক্সা চুরি হওয়ার কারণে সে দুইটি কিস্তি দিতে অপারগ হয় , তার বাসায় হানা দেয় পাঁচ ছয় জন এনজিওর মাঠকর্মীরা , অকথ্য ভাষায় কথা বলে বিভিন্ন রকমের মানহানিকর কথাবাত্রা বলে তাকে শেষপর্যন্ত প্রস্তাব দেয়া হয় ,  অন্য একটি মহিলার কাছ থেকে সুদে টাকা এনে যেন এনজিওর কিস্তির টাকা শোধ করা হয় , নতুবতাকে ধরে নিয়ে যাবে , এই নির্যাতনের কাতারে সে একা নয় , মারিয়া এর স্বামী বাজারে মাছের ব্যবসা করে , মারিয়া মারিয়া তিনটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলে তাকে অশ্লীল ভাষায় বলা হয় সে যেন ব্যবসা করে টাকা ইনকাম করে এরপরে কিস্তি শোধ করে কিস্তি চালিয়ে নিয়ে যায় , অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে তাকে দেহ ব্যবসার কথা বলা হয় , নারী অধিকার পরিপূর্ণভাবে খন্ডিত হয় , গোলাপজাম ,মমতাজ বেগম ,সওদা আক্তার ,গোলাপি , এরা সকলেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারণ এদের নাম যদি প্রকাশ করে তাহলে এনজিও লোকেরা এদের ক্ষতি করতে পারে , এই এনজিও গুলো , কিস্তি দিতে দেরি করলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতেও বিন্দু পরিমাণ দ্বিধাবোধ করে না ।
‌সভানেত্রী বা কেন্দ্রপ্রধান
এনজিও অনিয়মের দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের হাতিয়ার হচ্ছে সভানেত্রী নামের মহিলারা বা সন্ত্রাসীরা , সভানেত্রীদেরকে দিয়ে পরিপূর্ণ কাজ হাসিল করে নিচ্ছে এনজিওরা , তাদেরকে দিচ্ছেনা কোন বেতন দিচ্ছেনা কোন পরিচয় পত্র , শিখাচ্ছে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী , দায়িত্ব এক বোঝা পালন করতে বাধ্য হয় এই সভা নেত্রীরা , কিন্তু বেতন ছাড়াই , সভানেত্রীদের চাঁদা না দিলে কেউ ঋণ উঠাইতে পারবে না , এই হচ্ছে আমাদের এনজিও ।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৩১ জানুয়ারি -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here