আলোকিত ডেস্ক:
গ্যাস এবং বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য যা দাঁড়ায়, সেটা দিতে সবাই রাজি থাকলে সরবরাহে কোনও ঘাটতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে, যদি ক্রয়মূল্য যা হয়; সেটা সবাই দিতে রাজি থাকে। ‘আর এক্ষেত্রে কেন আমরা ভর্তুকি দেবো? ভর্তুকি দিচ্ছি কৃষিতে, খাদ্য উৎপাদনে এবং সাধারণ মানুষকে।’
৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নবনির্মিত ‘বিনিয়োগ ভবন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি, এখানে একটা কথা আছে। আমরা যে বিদ্যুৎটা দেই, সেটা উৎপাদনে আমাদের প্রতি কিলোওয়াট খরচ পরে ১২ টাকা। সেখানে আমরা নিচ্ছি মাত্র ছয় টাকা। তাতেই আমরা অনেক চিৎকার শুনি। ইংল্যান্ডে কিন্তু বিদ্যুতের দাম দেড়শ শতাংশ বাড়িয়েছে। এটা সবার মনে রাখতে হবে। আমরা সেই পর্যায়ে যাইনি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রেখে গিয়েছিলাম ২০০১ সালে, পরেরবার ২০০৯ সালে (ক্ষমতায়) এসে দেখলাম সেটা কমে গেছে, তিন হাজারে নেমে গেছে।’ বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়া বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না, এ রকম পেছনের দিকে কোনও দেশ যায় কি না!’শুধু বিদ্যুতে নয়, খাদ্য উৎপাদনেও দেশ পিছিয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা খাদ্য উৎপাদন করে, স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে ২০০১ এ যখন ক্ষমতা থেকে যাই, তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে গিয়েছিলাম। ২০০৯ এ ক্ষমতায় এসে দেখি আবার আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘যাই হোক, আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে আজকে সে সম্যা নেই। বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুৎ আমরা দিতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্যই ছিল যে, বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবো। আমরা পৌঁছে দিয়েছি।’ আজ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নিজস্ব প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। নবনির্মিত ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বিনিয়োগ ভবন’। সুইস চেপে ১২তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত ভবনটি উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও উপস্থিত ছিলেন। মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিডার যুগ্ম সচিব আশফাকুল আলম মুকুল।এ প্রসঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমরা বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করেছি, আসলে এটা আগে ছিল বিনিয়োগ বোর্ড। মৎস্য ভবনের একটা ফ্লোরে এর কার্যক্রম চলতো। আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চাই। বিদেশিরা আসলে ভালোভাবে দেখলে ভালো বিনিয়োগ হবে, না দেখলে হবে না।’তিনি বলেন, ‘সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আলাদা একটি সুন্দর ভবন করে দেবো। সেখানে যারা কাজ করবেন তারা যেন শান্তিতে কাজ করতে পারেন, কাজের একটা সুন্দর পরিবেশ হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যারা আসবেন, তারাও যেন এখানে কাজ করতে পারেন।’সালমান এফ রহমানের সভাপতিত্বে ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।