আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, অত্যাচার-নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির অধিকারের প্রশ্নে বিশ্বের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ তুরস্ক। বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যেও ছিল তুরস্ক। আজ সেই দেশটিতে ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ মানবিক সংকটে স্বভাবতই চুপ থাকতে পারেনি রোহিঙ্গারা। তুরস্কের দুর্গতদের জন্য যথাসাধ্য ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে তারা।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির খবরে জানা যায়, নিজেরা টাকা তুলে তুরস্কে ৭০০ কম্বল ও ২০০ জ্যাকেট পাঠিয়েছে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গারা। এটিকে তারা তুর্কি জনগণের জন্য ‘ভালোবাসার উপহার’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।সাহাত জিয়া হিরো নামে এক রোহিঙ্গা নেতা আনাদোলুকে বলেন, সংকট শুরুর পর থেকেই আমাদের সাহায্যদানকারীদের মধ্যে অন্যতম তুরস্ক। প্রিয় বন্ধুরা এমন বিশাল বিপর্যয়ের মুখে এখন আমরা কীভাবে চুপচাপ বসে থাকতে পারি?
তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ৭০০ কম্বল এবং ২০০ জ্যাকেট কেনা হয়েছে। নিজেদের সীমিত আর্থিক সংস্থান দিয়ে তুর্কি জনগণের জন্য সর্বোচ্চ এতটাই করতে পেরেছেন তারা।
সাহাত বলেন, আমরা উদ্বাস্তু, বেঁচে থাকার জন্য বেশিরভাগ অনুদান এবং অন্যদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এই উপহার হলো তুর্কি ভাই-বোনদের প্রতি আমাদের সীমাহীন ভালোবাসা এবং সংহতির চিহ্ন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার তুরস্কের সহযোগিতা এবং সমন্বয় সংস্থার (টিআইকেএ) ঢাকা অফিসে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিরা। টিআইকেএ’র বাংলাদেশ সমন্বয়কারী সেভকি মের্ট বারিস বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনুদান দেওয়া দেখে তারা খুবই আনন্দিত।
তুর্কি কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৪১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জাতিসংঘ ও সিরীয় সরকারের তথ্য বলছে, সিরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি।
তুরস্কে অন্তত আট হাজার মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক। ভূমিকম্পের পর সহমর্মিতা জানানো এবং সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।