র‌্যাবের সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলো বাংলাদেশ

0
155

আলোকিত ডেস্ক:

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) এর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সহায়তা চান। এসময় শোলে বাংলাদেশের এলিট অ্যান্টি ক্রাইম পুলিশ ইউনিটের কর্মক্ষমতার উন্নতির কথা স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ডেরেক শোলের বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী র‌্যাবের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন। শোলে মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সিনিয়র নীতি উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেন। তিনি বৈঠকে সাত সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ২৪ ঘণ্টার সফরে বাংলাদেশে আসেন শোলে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন পক্ষ র‌্যাবের উন্নত কর্মক্ষমতা স্বীকার করেছে। তবে বাহিনীর টেকসই সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে। র‌্যাব এখন ওয়াশিংটরনের নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। মোমেন বলেন, র‌্যাব আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী এবং বছরের পর বছর ধরে জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে নির্ধারিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির সদ্ব্যবহার করার পরামর্শ দেন।

সাত সদস্যের আন্তঃসংস্থা মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী শোলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি, ইউক্রেন সংকট, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং অধিকার সংক্রান্ত বিষয়সহ দ্বিপাক্ষিক এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। শোলে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে উদারভাবে আতিথ্য করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা এবং পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

মার্কিন পক্ষ আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ এবং ভাসানচরে তাদের মানবিক উদ্যোগ জোরদার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুততম টেকসই সমাধান এবং তাদের প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছে।রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ উপায়ে যেকোনও বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

শোলে জানিয়েছেন, খাদ্য সংকট সমাধানে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।এছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্ব নিরসনে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থনের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, এখানে মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বৈঠকে শোলে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব এবং মানবাধিকার রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সহযোগিতা এবং একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ওপর জোর দেন।

কাউন্সেলর ডেরেক শোলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ সফর হয়েছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি যে, বাংলাদেশে আমার প্রথম সফরটি বছরের শুরুতে হয়েছে যখন আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন করেছি।’

কাউন্সেলরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক দশকের সহযোগিতা এবং সমর্থনের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠেছে এবং আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অভিন্ন অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।’

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকার বাংলাদেশি ও আমেরিকান জনগণের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং মানবিক সহযোগিতা এবং বন্ধনের সম্পূর্ণ পরিসর সম্প্রসারণে নিবেদিত। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব (পশ্চিম) রাষ্ট্রদূত শাব্বির আহমদ চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ইউএসএআইডি প্রশাসকের কাউন্সেলর ক্লিনটন হোয়াইট, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ মধ্য এশিয়া ব্যুরোর প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এলিজাবেথ হর্স্ট এবং অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ ফর গ্লোবাল ক্রিমিনাল জাস্টিস বেথ ভ্যান শ্যাক যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ ফেব্রুয়ারি -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here