এম জসিম উদ্দিন : চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা গিলে খাচ্ছে কন্ট্রাক্টর আনোয়ার। রাঙ্গাদিয়া পুলিশ ফাড়িঁর পাশে ও মেরিন একাডেমীর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখলে নিয়ে তিনি গড়ে তুলছে বিভিন্ন স্থাপনা। মেরিন একাডেমীর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তুলছে বালু উত্তোলনের মহাযজ্ঞ। কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু বিক্রি করা হলেও রহস্যজনকভাবে নীরব প্রশাসন। সচেতন মহল মনে করেন কন্ট্রাক্টর আনোয়ার একের পর এক পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখলে নিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন হস্তক্ষেপ না থাকায় তিনি দিনেদিনে বেপরোয়া হয়ে একের পর এক জায়গা দখলে নিচ্ছে। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করেন স্থানীয়রা। এতো জায়গা দখলে নিয়েও ক্ষান্ত হননি কন্ট্রাক্টর আনোয়ার। দিন দুপুরে মেরিন একাডেমীর পাশে টিন দিয়ে ঘেরাও করে আরো জায়গা দখলে নিয়ে নিচ্ছে কথিত ঠিকাদার আনোয়ার। স্থানীয় জনগন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই একের পর এক দখলে নিচ্ছে এসব দামী জায়গাগুলো। অবৈধ বালু উত্তোলনের মহাযজ্ঞের জন্য প্রতি মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মাসিক মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগ তুলেন সেখানে কর্মরত সাধারণ শ্রমিকগন। কন্ট্রাক্টর আনোয়ারের দখলের রামরাজত্বের কাছে অসহায়ের মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানান, কন্ট্রাক্টর আনোয়ার বর্তমান ভূমিমন্ত্রীর সাথে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করে মন্ত্রী মহোদয়ের ক্লীন ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেছে। তিনি বিভিন্ন জায়গায় মন্ত্রী মহোদয়ের পিএসের প্রভাব খাটান বলে স্থানীয়নরা জানান। তার রয়েছে এলাকায় দখল বাজদের একটি গ্রুপ। তার ছেলে বিগত জোট সরকারের আমলে বিএনপি নেতা পরিচয়ে দাপট দেখাতো। এখন কন্ট্রাক্টর আনোয়ার আওয়ামী লীগের ভয় দেখান।
এক সময়ে আওয়ামী লীগের নীরব ভূমিকায় থাকা আনোয়ার এখন অবৈধ টাকার জোড়ে হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের অর্থসম্পাদক। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া দখলবাজ আনোয়ারের সম্পদের হিসাব নিতে দূর্ণীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা। আনোয়ারার আওয়ামী লীগের কয়েকজন ত্যাগী নেতারা জানান, মন্ত্রী মহোদয় কন্ট্রাক্টর আনোয়ারের লাগাম টেনে না ধরলে এর খেসারত দিতে হবে আওয়ামী লীগকে। নেতারা আরো জানান, টাকার কাছে যদি আওয়ামী লীগ হেরে যায় তাহলে ত্যাগীদের শ্রম বৃথা যাবে। মূল দলের জন্য হবে এটা একটি অশনিসংকেত। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ও মাননীয় ভূমিমন্ত্রী অবৈধ দখলবাজদের ব্যাপারে কঠোর বার্তা দেওয়ার পরেও কন্ট্রাক্টর আনোয়ার কোন খুঁটিরজোরে এমন বেপরোয়া আচরণ? তার অপকর্মের অনুসন্ধানে নেমেছে চট্টগ্রামের গণমাধ্যমের একটি অনুসন্ধানী টিম। এ বিষয়ে কন্ট্রাক্টর আনোয়ারের মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান আদালত ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আমি এসব স্থাপনা নির্মান করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। আদালত ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের অনুমতির কপি দেখাতে বললে (কন্ট্রাক্টর আনোয়ার) অনুমতির কপিগুলো দেখাতে তিনি রাজি হননি। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আবছার বলেন, সরেজমিনে তদন্তের পর উক্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি