কয়রায় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

0
243

প্রতিনিধি,কয়রা (খুলনা):

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর হলেও খুলনার কয়রা উপজেলার ২১৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৮২টিতে নেই কোনো শহীদ মিনার। উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়,এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। দেশ স্বাধীন হওয়ার এতদিন পরও শহীদ মিনার নির্মিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবক এবং স্থানীয়রা। তাদের অনেকেই জানান, একটা উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেই শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে না। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বও অনুধাবন করতে পারছে না।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ-মাদরাসা কিন্ডাগার্টেন মিলে ২১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩৬টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। ২৫টি মাদ্রাসার মধ্যে কয়রা মদিনাবাদ দাখিল মাদরাসা এবং চৌকনী ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসায় শহীদ মিনার আছে। সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ এবং মাদরাসায় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির অবহেলা, অর্থের অভাব ও প্রশাসনিক তদারকি না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি। এতে করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ভাষা আন্দোলনের চেতনা জাগছে না। ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাসও জানতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। উপজেলা সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কয়রা সরকারি মহিলা কলেজ এবং কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান দুটির নেই কোন শহীদ মিনার।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা জানান, নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনেক শিক্ষার্থী জানান, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার অনেকে জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।
কয়রা উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি মো.খায়রুল আলম বলেন, ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে শহীদ মিনারের প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্ম ২১ ফেব্রুয়ারি কেনো পালন করে সেসব বিষয়ে জানতে পারবে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ মো.আমিনুর রহমান বলেন,নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ,তবে সরকারি ভাবে চাহিদা পত্র দিয়েছি অর্থ বরাদ্ধ পেলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান জানান,আমি দায়িত্ব গ্রহণের পরে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৫ ফেব্রুয়ারি -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here