আলোকিত ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হয়েছে। ৫ মার্চ রবিবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস, র্যাব এবং পুলিশ উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ৪ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। শনিবার বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উদ্ধারকাজে অংশ নেন।
চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক জানান, সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের টিম। উদ্ধারকাজে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিভিন্ন কর্মীরাও সহায়তা করে করছেন। এটি একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট। হাজার হাজার অক্সিজেনের বোতল ছড়িয়ে আছে কারখানার চারপাশে। তাই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।
‘তখন বিকেল ৪টা ২০ মিনিট। আমার দোকানে অক্সিজেন প্ল্যান্টের চার জন শ্রমিক এবং আশপাশের এলাকার আরও কয়েকজন ক্রেতা ছিল। হঠাৎ আকাশ কাঁপানো শব্দ। মুহূর্তেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। দোকানের কাঁচ ভেঙে যায় আর লোহার বিশাল পাত দোকানের সামনে এসে পড়ে। কানে হাত দিয়ে শুধু মা মা বলে চিৎকার করেছি।’
কথাগুলো বলছিলেন সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে আহত ২৪ বছরের এক ছেলে । ঘটনার সময় ফ্যাক্টরির ফটকের বিপরীত দিকে দোকানের ভেতরে বসে ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণস্থল থেকে তার দোকানের দূরত্ব বড়জোর ৩০ হাত। বিস্ফোরণের বিভীষিকা বর্ণনা করে সে বলেন, ‘বিস্ফোরণ এত ভয়াবহ ছিল যে মুহূর্তেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। আমি চোখে কিছু দেখছিলাম না। ছিটকে কোথায় পড়েছি তাও মনে নেই। শুধু কানে হাত দিয়ে বাঁচার জন্য মা মা বলে চিৎকার করছিলাম।’
দোকান পরিষ্কার করতে করতে তিনি বলেন, এই ফ্যাক্টরিতে পালা করে কাজ চলে। পাঁচটি প্ল্যান্টের মধ্যে চারটি নষ্ট। একটিতে সিলিন্ডার ফিলিং কাজ চলে। প্ল্যান্টের নিজস্ব কর্মচারী ছাড়াও সিলিন্ডার ওঠানো-নামানোর জন্য ড্রাইভার এবং অন্যান্য শ্রমিক কাজ করেন। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘দোকানের সামনে রাস্তার ওপর বড় বড় লোহার অ্যাঙ্গেল পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি হেলে গেছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুলপুরে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এসব সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২৫ হাজার এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দিচ্ছে ২৫ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, শনিবার বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ছয় জন নিহত হন, আহত হয়েছেন আরও ২২ জন। আহতদের মধ্যে ১৭ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পাঁচ জন সীতাকুণ্ডের বিএসবি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের চিকিৎসায় খোঁজ রাখা হচ্ছে।