আলোকিত ডেস্ক:
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের সায়েন্সল্যাবে একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরফলে শিরিন ম্যানশন নামে ওই ভবনের তিনতলার দেয়াল আংশিক ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও আহত হয়ে অন্তত ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে রবিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ভবনটি আংশিক ধসে পড়ে এবং আগুন লাগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের চেষ্টায় বেলা ১১টা ১৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনতলা এই ভবনটির নিচতলা এবং দ্বিতীয় তলায় বেশ কয়েকটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। এছাড়াও এর পাশেই সুউচ্চ আবাসিক ভবন এবং প্রিয়াঙ্গন শপিংমল রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকায় গ্যাসের তীব্র গন্ধ ভেসে আসে। বিস্ফোরণে দেয়ালের ইট ও কাঁচ ছিটকে সড়কে পড়ে।
এদিকে এ ঘটনায় আহত হয়ে ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছয় জন ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাত জন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঢামেকের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত আট জনকে পেয়েছি। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিদের অধিকাংশরাই নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তাদের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ইনজুরি রয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুইজনকে ভর্তি করানো হয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ.মহিদ উদ্দিন বলেন, বিল্ডিংয়ের অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, বিল্ডিংয়ের অবস্থা ভালো নয়। ভবনটির তিনতলায় ছোট ছোট অফিস ছিল এবং একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিস ছিল। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমি মনে করি এই মুহূর্তে ভবনটিতে কারো প্রবেশ করা উচিৎ হবে না। আমরা ঝুঁকি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছি এবং পরিদর্শন করেছি। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চারটি কারণে এখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। একটি হলো শর্ট সার্কিট, জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণ, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এবং এসি বিস্ফোরণও হতে পারে । তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষ হলে সঠিক কারণ জানা যাবে। হতাহতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পপুলার হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে মিলে ১২ থেকে ১৪ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা গুরুতর। আর শুনেছি তিন জন মারা গেছে।
এদিকে এ ঘটনায় সায়েন্সল্যাব এলাকায় তীব্র ঝানজট সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০৫ মার্চ -২০২৩/মওম
