কে এই ল্যাংটা বাবা 

0
308
মোহাম্মদ জুবাইর
হঠাৎ আলোচনায় ল্যাংটা বাবা খ্যাত ইউসুফ আলী। এখন একটাই প্রশ্ন, কে এই ইউসুফ। তিনি অল্প সময়ে কীভাবে এত ধনী হলেন? আলাদিনের চেরাগ তিনি কোথা থেকে পেলেন? তার এত রাজকোষ কোথা থেকে এলো? কীভাবে এত টাকা পেলেন?
জানা যায়, ইউসুফ আলী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু উত্তর পাড়া এলাকার বদিউর রহমানের ছেলে। যার শৈশব কেটেছে অনাহারে। আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ হয়নি ইউসুফের। তাই অভাবের তাড়নায় ছুটে আসেন শহরে। চট্টগ্রাম মুরাদপুরে একটি হোটেলের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পান। কিন্তু সে চাকরী টিকেনি বেশি দিন। খুঁজে নেন অপরাধ জগৎ। অপরাধ জগতে হয়ে উঠেন দেশ সেরা ডন। তারপর বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় পুলিশের সোর্স হিসেবে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন। পরিচয় হয় সেনাবাহিনীর মেজর হত্যার অন্যতম আসামি টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপের সাথে। শুরু হয় তার মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা। তিনি হয়ে ওঠেন এলাকার আতঙ্ক।
ওসি সেজে সাধারণ মানুষকে ক্রস ফায়ারের হুমকি, মানুষকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়, বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গা নারী পাচার, মাদকের রমরমা ব্যবসা, নিজের অবৈধ রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়িতে মাদক পরিবহন ও চটগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সাপ্লাই, নিয়মমাফিক তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, মিথ্যা মামলা দায়ের, সাংবাদিককে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দেওয়া, পুলিশ সেজে রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে চাঁদা আদায় সহ নানা অপকর্মের ফিরিস্তি রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
চুরি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী, হুমকি, অপহরন ও মাদকসহ তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা ও অভিযোগ। এর মধ্যে  উখিয়া থানায় পাঁচটি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দুটি মাদক কারবার ও চোরাচালানের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে উখিয়া থানায় ২০২১ সালের ১৬ মার্চ তারিখে (এফআইআর নং–২৬/১৭৯) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর (জিআর নং–৩৪০/১৪) এবং ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর (এফআইআর নং–২০/৬০৭), তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায়  কিছুদিন আগে আরও একটি রাস্তায় বৈধ ভাবে মানুষকে তল্লাশি করায় মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। বাকি দুটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ২০০৭ সালের ৮ মার্চ তারিখে (জিআরনং–৪২/০৭) বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং ২০১৫ সালের ২২ জুন (জিআর নং–১৩৮/১৫) তারিখে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
সর্বশেষ মামলাটি হয় গত বছরের ২৬ অক্টোবর উখিয়া থানায়। যার এফআইআর নং- ৮০/১৩৩৯। ধারা: ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৩৬৫/৪২৭/৫০৬/৫১১। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, মারপিট করিয়া সাধারণ জখম করতো, ভায়ভীতি প্রদর্শন, অপহরণের চেষ্টা এবং চুরি করার অপরাধ।
বর্তমানে কোটি টাকার মালিক হিসেবে বনে গেছেন ইউছুফ আলী। তার রয়েছে গণিত সম্পদ। বর্তমানে তার ১৩ টি মাইক্রো রয়েছে। যার প্রতিটি গাড়ি মাদক পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি গাড়ির সামনে দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকার বড় করে স্টিকার সাটিয়েছেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো ইউসুফের রয়েছে ব্যাংক ভর্তি টাকা ও বান্দরবানে দুইটি বিলাস বহুল বাড়ি। যা এমপি মন্ত্রীর বাড়িকেউ হার মানিয়ে দিবে।
ইউছুফের রয়েছে একাধিক স্ত্রী। বর্তমানে এক রোহিঙ্গা মেয়েকে বিয়ে করে উখিয়ার কুতুপালংয়ে একটি বাসায় থাকছেন। ওই রোহিঙ্গা মেয়ে তার তৃতীয় স্ত্রী। তার দ্বিতীয় স্ত্রীও রোহিঙ্গা। তিনি বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭-এ অবস্থান করছেন বলে জানা যায়৷ তার প্রথম স্ত্রী তাদের বড় ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম বদ্দারহাটে থাকছেন। চার বউ চার যায়গায়, তাও ভিন্ন ভিন্ন ফ্লেটে। সচেতন মহলের প্রশ্ন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা কাজ না করা ইউসুফের আয়ের উৎস কি? প্রতিদিনের এত খরচ সে কিভাবে যোগান দেয়। এবিষয়ে তার মন্তব্য জানতে চাইলে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি মিয়ানমার পলাতক রয়েছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here