রমজানে রোজাদারের করণীয় ইবাদাত বন্দেগি

0
244

ধর্ম ডেস্ক:

ক্ষমা এবং নাজাতের মাস রমজান অতিবাহিত করছে মুসলিম উম্মাহ। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাস হিসেবে পরিচিত। এ মাসের ইবাদাত বন্দেগির সাওয়াব এবং ফজিলত অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। রমজানের রোজা পালনকারীর মর্যাদা আলাদা করতেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের রাইয়্যান নামক আলাদা দরজার ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে:

হজরত সাহল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে রাইয়্যান নামক একটি দরজা রয়েছে। কেয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতিত এ দরজা দিয়ে অন্য কাউকে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ঘোষণা দেয়া হবে- রোজাদাররা কোথায়?  তখন তারা (সব রোজাদার) দাঁড়াবে। তাদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। রোজাদাদের প্রবেশের পরপরই (রাইয়্যান নামক) দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করনে না পারে।’ (বুখারি)

এ বিশেষ মর্যাদা লাভে রোজাদারকে রমজানের যথাযথ হক আদায় করতে হবে। প্রথম দশকে রোজার হকগুলো আদায় করতে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দশকও ব্যর্থতায় পরিণত হবে। তাই প্রথম দশক থেকেই রমজানের যথাযথ হক আদায় করে আল্লাহর ভয় অর্জন করা জরুরি। তবেই রোজাদার পাবে হাদিসে ঘোষিত সব মর্যাদা এবং ফজিলত।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত রমজানের রোজা পালন এবং তার হক আদায় করা। সে আলোকে রোজাদারের জন্য বিশেষ কিছু করণীয় তুলে ধরা হলো:

১। দিনের বেলায় পানাহার এবং স্ত্রী-সম্ভোগ ত্যাগের নামই রোজা নয়, বরং প্রতিদিন অন্যায় কাজ, মিথ্যা, গিবত, হারাম উপার্জনসহ আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। রোজা রেখে এ কাজগুলো করলে সারাদিন উপবাস থাকার কোনো ফায়েদা নেই।

২। রমজান মাসের আমল-ইবাদাতে কোরআনের বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা এ মাসেই নাজিল হয়ে মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। ঈমানের দাবি হচ্ছে- ‘বান্দার প্রতিটি আমল হবে কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক।

৩। রোজা মানুষকে কষ্ট সহিষ্ণু শিক্ষা দেয়। অভুক্ত মানুষের অবস্থা মূল্যয়ন করতে শেখায়। সারাদিন উপবাস করে নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। তাই সাহরি এবং ইফতারে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা। রমজানের অতিরিক্তি খাবার বর্জন করা জরুরি।

৪। অযথা গল্প-গুজবে সময় ব্যয় না করে ইফতার পরবর্তী সময়ে ইশা এবং তারাবিহ নামাজ আদায়ের ব্যাপারে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা। আবার তারাবিহ পরবর্তী সময়ে শেষ রাতে নফল নামাজ, জিকির-আজকারসহ দোয়া-ইসতেগফার করা। রাতের শেষ সময়ে কল্যাণকর কাজ সাহরি গ্রহণ করা ।

৫। রমজানে সব অশ্লীল এবং বেহায়াপনা কাজ থেকে বিরত থাকা রোজা অন্যতম শিক্ষা। রোজা পালন করে অশ্লীল-বেপর্দার কাজ করা, অযথা সময় নষ্ট করে সিনেমা-টেলিভিশন দেখা, বেহায়াপনা সমৃদ্ধ মাধ্যমগুলোতে বিচরণ করা রমজানের রোজার আদর্শের পরিপন্থী কাজ। সব খারাপ মাধ্যমগুলোও পরিত্যাগ করা রোজার অন্যতম দাবি।

সর্বোপরি রমজান মাস অন্যান্য মাসের চেয়ে নীতি-নৈতিকতার শিক্ষার অন্যতম মাস। এ মাসেই মানুষ নৈতিক এবং দ্বীনি শিক্ষায় নিজেদেরকে আত্ম-নিয়োগ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাই যারা এ মাসের যথাযথ হক আদায় করে রোজা পালন করতে পারবে তাদের জন্য রমজানের নির্ধারিত এবং বিশ্বনবির দেয়া সুসবাংবদ বিশেষ জান্নাত রাইয়্যান।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উপরোল্লিখিত গ্রহণীয় এবং বর্জনীয় কাজগুলো যথাযথ আদায়ের মাধ্যমে রমজানের রহমত মাগফিরাত ও নাজাত লাভে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৩১মার্চ-২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here