চট্টগ্রামের চন্দনাইশে সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা; ২জন আটক

0
186
আব্দুল সাত্তার টিটু: 
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজি’কে পিটিয়ে দোতলা হতে নিক্ষেপ করে গুরুতর আহত করার প্রধান ২ আসামী র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম কর্তৃক গ্রেফতার।
১০ এপ্রিল সোমবার ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে সকালে ঢাকা মহানগরীর কমলাপুর এর সর্দারপাড়া কলোনীর একটি ব্যাচেলর মেসের থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। চন্দনাইশ থানার দোহাজারী এলাকার আব্দুল মুনাফিক এর ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন ও ২। পূর্ব দোহাজারী এলাকার আব্দুল ছবুরের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক‌।
র‌্যাব-৭ পতেঙ্গা চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মাহবুব আলম, পিপিএম, পিএসসি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে আইয়ুব মিয়াজীর ওপর দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়। পাহাড় কাটার বিষয়ে আইয়ুব মিয়াজী ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছিলেন। এই প্রতিবেদনের জেরে ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ বিকেল আনুমানিক ১৫.০০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজি (৩৪) এর উপর কতিপয় দুস্কৃতিকারী হামলা চালিয়ে পিটিয়ে জখম করত দোতলা হতে নিক্ষেপ করে গুরুতর আহত করে। ভিকটিম আইয়ুব মিয়াজীর দোহাজারী পৌরসভা এলাকায় আর কে প্লাজার দোতলায় একটি কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশ্যে তার নিজ প্রতিষ্ঠানে দুবৃত্তরা এ হামলা চালায়। পরবর্তীতে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভিকটিম সাংবাদিক আইয়ুব মিয়াজির মতে, সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ আলাউদ্দিন এবং মোহাম্মদ ফারুক হুমকি দেন। পরবর্তীতে দোহাজারীর স্টেশন রোডের আরকে প্লাাজায় অবস্থিত তার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গত মঙ্গলবার বিকেল আনুমানিক ১৫.০০ ঘটিকায় আলাউদ্দিন, ফারুকসহ ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি প্রবেশ করেন। তাদের সঙ্গে একজন নারীও ছিলেন। হামলাকারীরা এসে অতর্কিতভাবে আইয়ুব মিয়াজী’কে লাঠিসোঠা, ধারালো দা, হকস্টিক দিয়ে মারধর করা শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে দোতলা থেকে ফেলে দিয়ে গুরুতর আহত করে। আইয়ুব মিয়াজী বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরবর্তীতে বর্ণিত সাংবাদিককে দোতলা থেকে ফেলে দেওয়ার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ ঘটনার বিচার দাবি করে স্থানীয় সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করেন। উপরোক্ত ঘটনাটি প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে চন্দনাইশ সহ সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানায় ২জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২/৬০ তারিখ ০৫ এপ্রিল ২০২৩ই ধারা ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩২৬/ ৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় বর্ণিত ঘটনার পর পরই তারা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম হতে পালিয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকে। সর্বশেষ তারা ঢাকা মহানগরীর কমলাপুর এর টিটি পাড়া রোড এর সর্দারপাড়া কলোনীর একটি ব্যাচেলর মেসে আত্মগোপন করে এবং সেখান হতে গ্রেফতার হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১০ এপ্রিল-২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here