আব্দুল সাত্তার টিটু
চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে নিজ স্ত্রীকে নির্মম ও নৃশংসভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যাকারী ঘাতক স্বামী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন (২২)’কে নেত্রকোনা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
২৮ এপ্রিল শুক্রবার র্যাব-৭ এবং র্যাব ১৩ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর থানাধীন দূর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা কালিকাবর হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার মুচডেঙ্গা এলাকার মোঃ মকবুল হোসেন এর ছেলে।
র্যাব-৭ সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া মোঃ নুরুল আবছার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।র্যাব সূত্রে জানা যায়, ২৫ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন কলসী দীঘি সড়কের হাজি মাহমুদ মিয়া কলোনির একটি ভাড়া বাসার তালাবদ্ধ ঘর হতে একজন গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের নিকট হতে খবর পেয়ে পুলিশ দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ঘরে বিছানার ওপর চাদর দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে লাশ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার পর হতে ভিকটিমের স্বামী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন পলাতক থাকে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় ভিকটিমের স্বামী তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাসার ভিতরে রেখে পালিয়ে গেছে।
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ভিকটিমের স্বামী মোঃ সাখাওয়াত হোসেনকে একমাত্র আসামি করে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৬ তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ধারা ৩০২ পেনাল কোড ১৮৬০। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, নিহত ভিকটিম রিনা আক্তার (২৫) চট্টগ্রাম নগরীর কেইপিজেডে জিএমএস কারখানায় কর্মরত ছিলেন। গত ৫/৬ মাস পূর্বে ভিকটিম পরিবারের অগোচরে আসামী সাখাওয়াত হোসেন এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেছিলেন। কিছুদিন পূর্বে রিনা আক্তার এবং তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ বেড়াতে গিয়েছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখে রাতে তারা ময়মনসিংহ হতে চট্টগ্রামে আসে। ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের আনোয়ারায় ভিকটিমদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। গত ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ বেলা আনুমানিক ১৪২০ ঘটিকায় সাখাওয়াত ফোন করে রিনার পরিবারের এক সদস্যকে বলে রিনা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, আপনারা এসে দেখে যান। ওই দিন সকালে দুজনেরই সঙ্গে রিনার পরিবারের লোকজন ফোনে কথা বলার কারণে তাঁরা বিষয়টিকে ঠাট্টা মনে করে গুরুত্ব দেননি। পরদিন ২৫ এপ্রিল রিনার পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রিনার পরিবারের লোকজন তাদের বাসার মালিকের কাছে ফোন করে রিনাদের বাসায় গিয়ে দেখে আসার জন্য অনুরোধ করলে তিনি বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে বিছানার ওপর চাদর দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় রিনার মরদেহ উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/২৯এপ্রিল-২০২৩/মওম