বাজারে আসতে শুরু করেছে সোনারগাঁওয়ের  রসালো লিচু

0
282
মোঃ সুজন মাহমুদ:
সোনারগাঁওয়ে গাছে গাছে জুলছে রসালো লিচু। সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে আগাম আসে বলে বাজারে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের লিচুর তুলনায় সোনারগাঁয়ে লিচুর কদর অনেক বেশি।
বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখা যায়, এখন বাগানের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় লিচু ঝুলছে। ঝাঁকড়া গাছের ডালে ডালে ঝুলন্ত লাল টকটকে রঙের ছোট এই ফলের গুচ্ছ দেখতে বেশ মনোরম। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন বাগান। বাদুড় এবং কাকের উপদ্রপ থেকে বাঁচাতে তারা গাছের চূড়ায় ইলেক্সটিক বাতি, পলিথিন কাগজ, বাস ও টিনের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বাজনা (ঠাঠা) লাগিয়ে বাগান পাহারা দিয়ে আসছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, সোনারগাঁ পৌরসভার, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লিচু বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সরদার বাড়ী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, দুলালপুর, বাড়ী মজলিশ, দীঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, গোবিন্দপুর, হাতকোপা, দরপত, ছাপেরবন্ধ, গোয়ালদী, টিপরদী, হরিষপুর, ইছাপাড়া, চিলারবাগ, কৃষ্ণপুরা, হাঁড়িয়া, পানাম গাবতলী, ষোলপাড়া ও ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্টমানের লিচুর চাষ হয়।
লিচু চাষিরা জানায়, সোনারগাঁয়ে বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি এই পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। তবে কদমী লিচু চাষের প্রতি চাষিরা মনোযোগী বেশি। প্রতি বছর এক একটি বাগান তিন চার লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তাই কোথাও একটু খালি জায়গা পেলেই চাষিরা সেখানে কদমী লিচুর গাছ লাগায় বা বাগান তৈরি করে। আগে সাধারণত শৌখিনতার বসে বাড়ির আশপাশে লিচু গাছ লাগানো হতো। এখন তা বাণিজ্যিকভাবে নিচু জমি ভরাট করে লিচু বাগান তৈরি করা হচ্ছে। বাড়ির আঙ্গিনায় ও কৃষি জমির পাশেও লিচুর চাষ করছেন অনেকেই। লিচুর মধ্যে সবার আগে বাদামি (পাতি) লিচু পাকে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য লিচু পাকতে শুরু করে। স্বাদে ও রসে পাতির লিচুর কদর রয়েছে বেশ। সোনারগাঁয়ে ছোটবড় মিলিয়ে তিন শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানের বেশির ভাগেই কদমী লিচুর চাষ হয়।
সনমান্দী গ্রামের লিচু ব্যবসায়ি নুরুজ্জামান জানান, সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন প্রজাতির লিচুর চাষ হলেও কদমী লিচুর চাষে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর লিচুর ফলন কম হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর লিচু হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে এবং মানও অনেক ভালো।
প্রতি হাজার পাতি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকায় আর কদমী লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রতি হাজার সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, অন্যান্য এলাকার লিচুর চেয়ে সোনারগাঁয়ের লিচু আকারে বড় এবং সুস্বাদু হওয়ায় এ লিচুর চাহিদা বেশি।
আলোকিত প্রতিদিন/০৭ মে -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here