মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা, ১০ দিন পর লাশ উদ্ধার: গ্রেফতার-৩

0
188

সফি সুমন:

ঢাকার আশুলিয়ায় অপহরণের দশদিন পর ফারাবি আহমেদ হৃদয় (২২) নামে এক কলেজছাত্রের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৪। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে র‌্যাব।  ১৮ মে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে আশুলিয়ার শিববাড়ি মোজার মিলের ইষ্টার্ন হাউজিং এলাকার একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পানিতে লাশ যেন ভেসে না ওঠে, সে জন্য বস্তার সঙ্গে ইট বেঁধে দিয়েছিল হত্যাকারীরা। অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে না পেয়ে শ্বাসরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।  নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এইসএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ঘটনার পরে ১১ মে আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে নিহতের পরিবার।গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামির মধ্যে মানিকগঞ্জের সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে ময়েজ হোসেন পরাণ (২২) আশুলিয়ার জামগড়ায় ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতো। বুধবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপরজন বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের মোঃ তাহেরুল ইসলামের ছেলে সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫) আশুলিয়ার শ্রীপুরে বাসা ভাড়ায় থেকে নির্মাণশ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। তাঁকে বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪। আকাশ নামের আরেক আসামীকে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আকাশ পেশায় একজন পোশাকশ্রমিক। লাশ উদ্ধারের পর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, হৃদয়ের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। হৃদয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। নিখোঁজের দিন ৮ মে জামগড়া এলাকার একটি বাসায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় হৃদয়কে। পরে জামগড়া থেকে লাশ নিয়ে শ্রীপুর এলাকার একটি জলাশয়ে তার লাশ ফেলে দেয়। র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুর রহমান বলেন, ‘র‌্যাব এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও জড়িত একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম আমরা প্রকাশ করছি না। হত্যাকাণ্ডে হৃদয়ের বন্ধুরাই জড়িত। তারা বন্ধু হিসেবে একসঙ্গে চলাফেরা করত। হৃদয়ের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ায় তারা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’ আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৯ মে -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here