রাশিয়া-চীনকে চাপে রাখতেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে কথা বলছে জি-৭

0
162

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাশিয়া এবং চীনকে চাপে রাখতেই গ্রুপ অব সেভেন বা জি-৭ পরমাণু অস্ত্র নিয়ে কথা বলছে বলে অভিযোগ করেছে মস্কো। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্পর্কে রাশিয়া ও চীনকে আরও বেশি স্বচ্ছতা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিল। ২২ মে সোমবার রাশিয়া এই অভিযোগ সামনে আনল। ২৩ মে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,পারমাণবিক বিষয়ে জি-৭ দেশগুলো বাগাড়ম্বরপূর্ণ উক্তির একমাত্র লক্ষ্য মস্কো ও বেইজিংয়ের ওপর মনস্তাত্ত্বিক, সামরিক এবং রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা বলে সোমবার জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রয়টার্স বলছে, সদ্য সমাপ্ত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে জারি করা প্রথম আনুষ্ঠানিক ইশতেহারে গ্রুপটি রাশিয়া এবং চীনকে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্পর্কে আরও বেশি স্বচ্ছতা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। মূলত পারমাণবিক অস্ত্রাগার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের পদক্ষেপের মতো একই পথে হাঁটার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার এই নথির বিষয়ে মন্তব্য করেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেছেন, জি-৭ সদস্য দেশগুলোর এই বিবৃতিটি গ্রুপের রুশ-বিরোধী এবং চীন-বিরোধী সুরকেই প্রতিফলিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মন্তব্যে রিয়াবকভ বলেছেন, ‘আমাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আকারের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর এই বক্তব্যের একটিই লক্ষ্য রয়েছে। রাশিয়া ও চীনের ওপর মনস্তাত্ত্বিক এবং সামরিক-রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা।’ তার ভাষায়, ‘এর পেছনে স্পষ্টতই আমাদের (এবং বন্ধু) দেশগুলোকে হেয় করার প্যাথলজিকাল ইচ্ছা রয়েছে।’ রয়টার্স বলছে, জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের বক্তব্য নিয়ে চীন এবং রাশিয়া উভয়ই ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশ যে কার্যত একই অবস্থানে রয়েছে সেটিও তুলে ধরেছে। এছাড়া মস্কো এই শীর্ষ সম্মেলনকে রুশ-বিরোধী এবং চীন-বিরোধী হিস্টিরিয়ার ‘ইনকিউবেটর’ বলে অভিহিত করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ঠিক আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল। উভয় নেতা সেসময় তাদের অংশীদারিত্বে ‘কোনো সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। মূলত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং তার ‘প্রিয় বন্ধু’ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্বের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই দুই পরাশক্তি দেশ নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং।

রয়টার্স বলছে,দ্বিপাক্ষিক সফরের ধারাবাহিকতায় চীনা কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করতে সোমবার চীনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন। মস্কো-বেইজিংয়ের সম্পর্ক দ্রুত বাড়ছে এবং একইসঙ্গে বেড়েই চলেছে এই দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর অস্বস্তিও।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ মে -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here