রামগতিতে বাগদা,গলদা চিংড়ির রেণু সংগ্রহে সরকারি নিষেধাজ্ঞা-মানছে না ব্যবসায়ীরা

0
269

প্রতিনিধি,লক্ষ্মীপুর:  

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে বাগদা এবং গলদা চিংড়ি রেণু সংগ্রহের ধূম পড়ে। এ সময়টাতে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা নদীতে বেলে জাল নিয়ে নেমে পড়েন চিংড়ির পোনা সংগ্রহে। মেঘনার রেণুর চাহিদা রয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ির ঘেরগুলোতে। ফলে এ অঞ্চল থেকেই অবৈধভাবে সংগ্রহ করা কোটি কোটি চিংড়ির রেণু পাচার করা হচ্ছে। এসব চিংড়ি সংগ্রহে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রতিটি রেণু সংগ্রহে মারা পড়ে অন্তত ১০-২০টি অন্য প্রজাতির মাছ। ফলে একশ রেণু সংগ্রহ করতে হলে নদীর অন্য প্রজাতির এক থেকে দুই হাজার পোনা মাছ ধ্বংস করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে মারা পড়ছে কাঁকড়া, কাছিমসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী। এতে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য সম্পদসহ জীব বৈচিত্র্য।

২২ মে  সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার রামগতি  উপজেলার মেঘনা নদীর আলেকজান্ডার  এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীতে চিংড়ি রেণু শিকারের মহোৎসব চলছে। শিশু থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা রেণু শিকারে নিয়োজিত। আলেকজান্ডার এবং মুন্সির হাট ঘাটের পাশে থাকা আড়তে বিক্রি করা হচ্ছে চিংড়ির রেণু। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেণু ক্রয়-বিক্রয়ে ঘাটে শক্ত একটি সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় একদিকে নদী থেকে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকাশ্যে রেণু ক্রয়-বিক্রয় করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পাচার করা হচ্ছে। কয়েকজন রেণু সংগ্রহকারী জানান, প্রতিদিন তারা রেণু সংগ্রহ করেন। বেলে জালের সাহায্যে তারা নদীতে বেড় দেন। এতে পানিতে থাকা সব রকম মাছের পোনাসহ জলজ প্রাণী উঠে আসছে। সেখান থেকে সুক্ষ্মভাবে বাগদা চিংড়ির রেণু খুঁজে বের করে আলাদা পাত্রে রাখা হয়। বাকি মাছের পোনাসহ জলজ প্রাণীর পোনা তীরে ফেলে দেয় তারা। এতে সেগুলো মারা পড়ে। রেণু সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমনটা জেনেও তারা কিভাবে নির্বিঘ্নে রেণু শিকার করছে- এমন প্রশ্নে তারা জানায়, অভাবের তাড়নায় রেণু সংগ্রহ করেন তারা। আড়তদারের কাছ থেকে দাদন নিয়েছেন। সে কারণে অন্য মাছ নষ্ট হলেও তাদের কিছু করার থাকে না। তারা শুধু নদী থেকে রেণু সংগ্রহ করে নদীর তীরবর্তী আড়তে পৌঁছে দেন। আড়তদার বড় বড় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে সেগুলো বিক্রি করেন। সবকিছু ম্যানেজ করেই আড়তদাররা এ ব্যবসা চালান। তারা জানায়, প্রতি হাজার রেণু তারা বিক্রি করেন ১২শ থেকে ১৫শ টাকায়। কোনোদিন ৫০০ রেণু থেকে শুরু করে দেড় থেকে দুই হাজার রেণু তারা সংগ্রহ করতে পারেন।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শান্তনু চৌধুরী  দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন কে বলেন, রেণু সংগ্রহের সময় মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। রেণু সংগ্রহকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৪ মে -২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here