ডেঙ্গু নিয়ে নতুন আতঙ্ক, রোগীর অস্বাভাবিক আচরণ

0
210

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ার সঙ্গে এবার আতঙ্কের কারণ জ্বরের ধরন। চিকিৎসকরা বলছেন, এ বছর আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই করছেন অস্বাভাবিক আচরণ। উপসর্গের শুরু হচ্ছে বমি, পাতলা পায়খানা ও দুর্বলতা দিয়ে। শক সিনড্রোমেই ঘটছে বেশিরভাগ মৃত্যু। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত পাঁচ বছরের তাহিয়া। দুই দিন ধরে চিকিৎসা চলছে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়লেও উপসর্গের শুরু পাতলা পায়খানা থেকে। আর তাই বুঝে উঠতেও কালক্ষেপণ হয় অভিভাবকদের। তাহিয়ার বাবা বলেন, এক সপ্তাহের ওপর তার জ্বর। প্রথমে খাবারের রুচি নষ্ট হয়ে যায়। তারপর পাতলা পায়খানা ও পেটে ব্যথা শুরু হয়। এ হাসপাতালে ভর্তির আগে ইবনে সিনা হাসপাতালে দেখিয়েছিলাম।

একই হাসপাতালে তাহিয়ার মতো চিকিৎসাধীন ৭৭ শিশু। শিশু রোগীরা বলছে, হঠাৎ করে জ্বর উঠেছে। পরে শরীরে ব্যথা শুরু হয়। খুবই খারাপ লাগছে। বমি বমিও লাগছে।

এদিকে তাহিয়ার ভাগ্যে একটি বিছানা জুটলেও অনেক বাচ্চার চিকিৎসা চলছে হাসপাতালের মেঝেতে। কেননা প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী। বাড়ছে হাসপাতালে চিকিৎসার চাপ। বেড ফুরিয়ে গেলেও বিকল্প নানা ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছর ডেঙ্গু রোগী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করছেন চিকিৎসকরা। আগের মতো উচ্চমাত্রার পাঁচ দিনের জ্বরে না ভোগে, সামান্য জ্বর নিয়েও ডেঙ্গু হচ্ছে অনেকের। এ ছাড়া, আগে চার পাঁচ দিন জ্বরে ভোগে, সেরে যাওয়ার পরই কেবল জটিলতা শুরু হতো। তবে বর্তমানে জ্বরের শুরুতেই অথবা দ্বিতীয়, তৃতীয় দিনেও জটিলতা নিয়ে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে রোগীর নিয়মিত পরীক্ষার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি খুব খারাপ হচ্ছে। বেশিরভাগ শিশুকেই ডেঙ্গুর জটিল লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আনছেন অভিভাবকরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহামেদ বলেন, এবার রোগীদের জন্য পরামর্শ হলো, বেশি জ্বর দেখা দিলে ডেঙ্গু সন্দেহ করুন। এরপর দ্রুত পরীক্ষা করুন। যদি জ্বর থেকে দুর্বলতা বেশি হয়, তবে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হোন। চলতি বছর সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চার হাজার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের ৪টি ধরনের একটিতে কেউ আক্রান্ত হলে পুনরায় ওই ধরনটিতে আক্রান্তের ঝুঁকি না থাকলেও বাকি ৩ ধরনের আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার যদি কেউ আক্রান্ত হোন, তার জটিলতাও থাকে অনেক বেশি। চলতি বছর যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই এর আগেও ভুগেছিলেন ডেঙ্গুতে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ জুন ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here