বিশেষ প্রতিবেদক :
সাংবাদিক পরিচয় দিতে সনদ পেতে হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। বিভিন্ন সময়ে প্রকৃত সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির দাবি ওঠে সারা দেশের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে। এই দাবির মুখে বর্তমান সরকার গত বছরের শুরুতেই একটি তালিকা/ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়। তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত ফর্ম পাওয়া যাবে। ফর্মটিতে বর্তমানে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সীল এবং স্বাক্ষরসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে পূরণ করে কাউন্সিলে জমা দিতে হবে। তারপরই কাউন্সিল যাচাই বাছাই করে একটি সনদ দিবে এবং সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া যাবে। সম্প্রতি মাগুরা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক নাসিম আবারো এ তালিকা প্রণয়ন ও সনদের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সারা দেশের সাংবাদিকদের ডাটাবেইজ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। মফস্বল সাংবাদিকদের ডাটাবেইজ তৈরির জন্য আমরা জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছি। ডাটাবেইজ তৈরির ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই করা হবে। যাচাই বাছাই শেষে বার কাউন্সিলরের মত আমরা প্রকৃত সাংবাদিকদের সনদ দেবো। এই সনদধারীরাই কেবল নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ধরা হয়েছে স্নাতক ডিগ্রি পাস। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ৫ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের শিক্ষাগত যোগ্যতার এই শর্ত কিছুটা শিথিল থাকবে। এ পর্যন্ত ২২টি জেলার সাংবাদিকদের ডাটাবেজ কাউন্সিলে জমা হয়েছে। এর আগে গত বছর জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখে তথ্য অধিদফতর থেকে একটি চিঠি দেশের সব জেলায় তথ্য অফিসে পাঠানো হয়। চিঠিটি ১৫-২০ জানুয়ারির মধ্যে জেলা তথ্য অফিসগুলোতে পৌঁছে এবং তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। এর মাঝে স্থানীয় ইউপি এবং পৌর নির্বাচন চলায় অনেক জেলা/উপজেলার সাংবাদিকরা যথাসময়ে তালিকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় অনেক জেলায় তালিকা তৈরির কাজ অধিকাংশই বাকি রেখে ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই শেষ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাই বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের দাবির মুখে তালিকা তৈরির সময়সীমা আরও বাড়ানো হয় বলে জানা গেছে। এদিকে প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক নাসিম আরও বলেন, আগে সাংবাদিকদের নামে প্রেস কাউন্সিলে মামলা দেয়া হলে সেখানে রায়ে শুধুমাত্র তিরস্কারের বিধান ছিল। এখন সেটি সংশোধিত হয়ে ৫ লাখ টাকার জরিমানার বিধান সংযুক্ত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রেস কাউন্সিল কেবল প্রিন্ট মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া এখনো এই কাউন্সিলের আওতায় আসেনি। ভবিষ্যতে হয়ত আসবে। এ ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি। প্রেস কাউন্সিল, প্রেস ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এবং সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। ডাটাবেজ তৈরি হলে কারা সাংবাদিক সবাই জানবে। জিজ্ঞেস করা যাবে আপনি সাংবাদিক, আপনার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার কত।’তিনি বলেন, ‘এখন কত হাজার জন সাংবাদিকতা করেন, তা সাংবাদিকরাও বলতে পারে না। এই পরিস্থিতির উত্তরণ প্রয়োজন। কারণ, কিছু মানুষ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক নাম ধারণ করে প্রকৃত সাংবাদিক সমাজের প্রতি একটি বিরূপ মনোভাব মানুষের মাঝে সৃষ্টি করছে। সাংবাদিকতা শুধু একটা পেশাই নয় অনেক সাংবাদিকদের কাছে এটা একটা ব্রত মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ, রাষ্ট্র, জাতি গঠনে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। জহুর হোসেনের মতো সাংবাদিকরা যেভাবে জাতি ও সমাজের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন, আপনারাও সেভাবে কাজ করে যাবেন।’
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ জুন ২৩/ এসবি