তানজিলা আক্তার রুবী:
একটি খুনের মামলার দায় থেকে বাঁচতে নিজেদের পক্ষের ১২ বছরের এক শিশুকে খুন করা হয়েছে। নিহত শিশু নয়ন নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পানগাঁও গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে। এ ঘটনায় আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পুরো বিষয়টি বের হয়ে আসে। ২০২২ সালে ৭ নভেম্বর সারারাত নিখোঁজের পর ভোর বেলায় ওই গ্রামের মঞ্জু মিয়ার নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে থেকে মরদেহ কেন্দুয়া থানার পুলিশ উদ্ধার করে। শনিবার (১৭জুন) সকালে নেত্রকোণা জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবীর সংবাদ সম্মেলনরে মাধ্যমে এসব তথ্য জানান। হত্যার সময় নয়নের পায়ের রগ কেটে ফেলাসহ অন্তত ১৭টি আঘাত করা হয়। পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবীর বলেন, ২০১৭ সালে একই গ্রামে রহিমা নামে এক নারী খুন হন। এই খুনের ঘটনায় ওই গ্রামেরই শামছুল হক, আসাদুজ্জামান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। এর জেরে নিহত রহিমার পক্ষের লোক রায়হান, মোজাহিদদের ফাঁসাতে নয়নকে খুন করে আসাদুজ্জামান ও শামছুল হকের লোকজনেরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে নয়ন হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তথ্য প্রযুক্তিসহ নানাভাবে চালানো তদন্তের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার আসাদুজ্জামানকে গ্রেফতার করে পিবিআই। শুক্রবার পিবিআইয়ের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুজ্জামান নয়ন হত্যার বিবরণ দেয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রামের জঙ্গল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুড়িটি উদ্ধার করে পিবিআই। পুলিশ জানায়, সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের শেষে ৯ নভেম্বর নয়নের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে কেন্দুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কেন্দুয়া থানার মামলা নং-১৬/২০২২খ্রি:। এই মামলার তদন্তকারী জেলার পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ইমদাদুল বাশারের সন্দেহ হয় পরিবারে লোকজনের বিভিন্ন কথা শুনে। নয়নের পরিবারের লোকজনের পূর্ব শত্রুতার কারণে অন্য লোকদের ফাঁসানো হচ্ছে। তদন্তে পাওয়া যায়, ২০১৭ সালে রহিমা হত্যা মামলার কারণে দীর্ঘদিন হয়রানির শিকার হওয়ায় ক্ষোভে শিশু নয়নকে হত্যা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানায়, অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শিশু নয়ন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মো. ইমদাদুল বাশার ও পুলিশ পরিদর্শক অভিরঞ্জন দেব।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৭ জুন ২৩/ এসবি