দিনে গড়ে ৪ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা লেনদেন মোবাইলে

0
180

আলোকিত ডেস্ক :

গত সাড়ে চার বছরে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএসের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে প্রায় চার গুণ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গ্রাহকও। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলের মাধ্যমে ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। দৈনিক গড়ে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭০ কোটি টাকা। আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত এপ্রিল মাসে সেই লেনদেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকায় উঠেছে। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা।সাড়ে চার বছর আগে এমএফএসে গ্রাহক হিসাব ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। এপ্রিলে সেই গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে ২০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এই তথ্যই বলছে, দেশের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখছে মোবাইল আর্থিক সেবা এমএফএস। ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। সব লেনদেন হচ্ছে এখন নিমেষেই। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতনভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে বিকাশ ও রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের সেবা নগদও দিচ্ছে এই সেবা। দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ এখন এসব সেবার গ্রাহক। সারা দেশে এসব সেবায় নিবন্ধন হয়েছে ২০ কোটির বেশি। যদিও সক্রিয় ব্যবহারকারীর হিসাব সাড়ে ৭ কোটির মতো। ১২ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের দেশে এই সংখ্যা নেহাত কম নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে মোবাইলের মাধ্যমে ৩৪ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। তখন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৭। লেনদেনের অঙ্ক ও গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে লেনদেন হয় ৪৫ হাজার ৬ কোটি টাকা; গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে হয় ৯ কোটি ৯ লাখ ২৩ হাজার ৫৪২। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে লেনদেন বেড়ে হয় ৬২ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা; গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ কোটি ৫১ লাখ ১৬ হাজার ২২৩। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে লেনদেন হয় ৮৪ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা; গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭ কোটি ৩২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭২। গত বছরের এপ্রিলে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। একক মাসের হিসাবে যা ছিল এতদিন তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন; ওই মাসে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ কোটি ২৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৪। এর পরের মাসগুলোতে অবশ্য লেনদেন কমে আসে; তবে হিসাব বা গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মে মাসে লেনদেন হয় ৭৬ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে ৯৪ হাজার ২৯৩ কোটি টাকায় ওঠে।  জুলাইয়ে লেনদেন হয় ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। আগস্টে হয় ৮৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে লেনদেন হয় যথাক্রমে ৮৭ হাজার ৬৩৫, ৯৩ হাজার ১৩, ৯২ হাজার ১২৫ এবং ৯৬ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে ১ লাখ ৫৯৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়; গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে হয় ১৯ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ১৩৭। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন কমে ৯৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকায় নেমে আসে। তবে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে হয় ১৯ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৭১। মার্চ মাসে লেনদেন বেড়ে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকায় ওঠে; মোট হিসাব সংখ্যা বেড়ে হয় ১৯ কোটি ৮০ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩ জন। সবশেষ এপ্রিল মাসে লেনদেন এক লাফে বেড়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকায় উঠেছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৮ জুন ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here