জি এম রাশেদুল ইসলাম:
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলগুলো। পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে নদ-নদী অববাহিকার নিচু এলাকার ঘর-বাড়িতে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। তলিয়ে যেতে শুরু করছে রাস্তা, ঘাটসহ ফসল ও সবজিখেত। আসন্ন ঈদের আগে বন্যার শঙ্কা নিয়ে দিন পাড় করছে চরাঞ্চলের মানুষেরা। ইতোমধ্যে অনেকের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি জেলার ভুরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় সব কয়টি নদ নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেশ কিছু চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে চরাঞ্চলের যোগাযোগে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।অনেক বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়ছেন তারা। এছাড়াও গবাদি পশু পাখি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরাজী পিপুল বাড়ি গ্রামের মো. জয়নাল মিয়া বলেন, গত তিনদিনে বৃষ্টি আর নদীর ঢলে এলাকার চরগুলো ডুবে গেলো। পটল, তিলখেত তলিয়ে গেছে।এখন বাড়িতে পানি ঢুকতে শুরু করছে। গরু ছাগল শিশু বাচ্চাদের নিয়ে আমাদের আবার কষ্ট শুরু হলো। বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন বাসিন্দা মো. মোতাহের হোসেন বলেন, চরের রাস্তা তলিয়ে গেছে। এখন নৌকা হবে আমাদের ভরসা। যাদের নৌকা নেই, তারা কলা গাছের ভেলা বানিয়ে চলাচল করবে। বন্যা এলে আমাদের দুর্ভোগ বাড়তেই থাকে। যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নের অনেক আবাদী জমি তলিয়ে গেছে। চরে শতাধিক বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দু একদিনের মধ্যে বন্যা হতে পারে। বিশেষ করে চর পার্বতীপুর, পোড়ার চরের মানুষেরা বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়ছেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে জেলার সব কয়েকটি নদ নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করে নাই। আরো দুদিন এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে বড় ধরনের বন্যার সম্ভবনা নেই বলে জানান তিনি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, জেলার সব কটি উপজেলায় প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নিচ্ছি। বন্যা মোকাবিলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া আছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২০ জুন ২৩/ এসবি