আলোকিত ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশনে আপিল করলেও খুব বেশি আশাবাদী ছিলেন না আলোচিত অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম; তবে সেই আপিলেই ঢাকা-১৭ আসনের উপ নির্বাচনে তার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়েছে ইসি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের পাশাপাশি জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসানের মনোনয়নপত্রও আপিলে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, যে আটজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে বাতিল হয়েছিল, তাদের মধ্যে চারজনের আপিলের ওপর বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে শুনানি হয়।এর মধ্যে মো. আশরাফুল হোসেন আলমের আপিলটা গৃহীত হয়েছে। জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসানের আপিল গৃহীত হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম ভুঁঞা ও শেখ আসাদুজ্জামান জালালের আপিলটা নামঞ্জুর হয়েছে। বাছাইয়ের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন তালিকায় প্রয়োজনীয় ভোটারদের খোঁজ না পাওয়ায় গত ১৮ জুন হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরসংবলিত একটি তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। অতীতে সংসদ সদস্য থাকলে ওই বিধান প্রযোজ্য হয় না। ওই এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জটিলতার কারণে ঢাকা-১৭ আসনের আরও চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। আর জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয় বিল খেলাপি হওয়ার অভিযোগে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত ২০ জুন নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন হিরো আলম। তবে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে খুব বেশি কিছু আশা করেন না জানিয়ে সেদিন তিনি বলেছিলেন, রিটার্নিং অফিসার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, কমিশনও একই সিদ্ধান্ত দেয়। আমার ভোটাররা সঠিক থাকার পরও তারা নাকি খোঁজ পায় না। আগে দুইবার আপিল করেও পাইনি। এবার ঢাকায়ও হয়ত প্রার্থিতা ফিরে পাবে না। তবে এখানে না পেলে অবশ্যই হাই কোর্টে যাব। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং এ বছরের শুরুতে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনেও এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জটিলতার কারণ দেখিয়ে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুইবারই তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। এবার আর তার আদালতে যাওয়ার দরকার হল না। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, হিরো আলমের পক্ষের সমর্থন তালিকা থেকে দৈব চয়নের ভিত্তিতে বাছাই করা তিনজনের স্বাক্ষর সঠিক পাওয়া গেছে। মাইনর এরর হিসেবে আপিলটা মঞ্জুর করেছে। আর জাকের পার্টির প্রার্থীর এক মাসের বিল খেলাপিজনিত সমস্যার সমাধান হওয়ায় আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে। এ আসনের উপ নির্বাচনে ২০ জন মনোনয়নপদ্র তুললেও ১৫ জন জমা দেন। বাছাইয়ে ৮ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়। দুজনের আপিল টিকে যাওয়ায় এখন বৈধ প্রার্থী থাকলেন মোট নয়জন। হিরো আলম ও রাশিদুল হাসান ছাড়া বাকি সাতজন হলেন: আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থি সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টির মো. কামরুল ইসলাম (চেয়ারম্যান মনোনীত), গণতন্ত্রী পার্টির অশোক কুমার ধর (মহাসচিব মনোনীত), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আকতার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। পরদিন হবে প্রতীক বরাদ্দ। সবশেষে ১৭ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যালট পেপারে এই আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এ উপনির্বাচন হচ্ছে। ভোটে যিনি জয়ী হবেন, তিনি কয়েক মাসের জন্যই কেবল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২২ জুন ২৩/ এসবি