পলাশবা‌ড়ি সরকা‌রি হাসপাতালে জনবল সংক‌ট, স্বাস্থ্য সেবার বেহাল দশা

0
172
রানা ইস্কান্দার রহমান:
গাইবান্ধার পলাশবা‌ড়ী সরকা‌রি হাসপাতালের জনবল সংক‌টে স্বাস্থ্য সেবার বেহাল অবস্থা। বি‌শেষ ক‌রে প‌রিস্কার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংকট চর‌মে। মাত্র ৩ জন (দুইজন সরকা‌রিভা‌বে নি‌য়োগপ্রাপ্ত ও আউট‌সো‌র্সিং থে‌কে একজন) প‌রিচ্ছন্ন কর্মী দি‌য়ে চল‌ছে প‌রিস্কার প‌রিচ্ছন্নতার কাজ। এতে চিকিৎসা সেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে হাসপাতালে ঢুকতেই নাকে লাগবে দুর্গন্ধ। পানির ট্যাঙ্ক দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় পানিবাহিত রোগব্যাধি বংশ বিস্তার করছে। বাথরুম প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী। ফলে চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালের ভিতরে কুকুরের অবস্থানসহ চারপাশ ঘিরে গরু, ছাগল আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ দেখতে পাওয়া যায়। ৩০ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়া পলাশবা‌ড়ি হাসপাতালে প্রতিদিনই শত শত রোগী আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে। উপজেলার ১‌টি পৌরসভা সহ ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ চিকিৎসা সেবার জন্য এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর নির্ভরশীল। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে। প্রতিদিন স্বল্প আয়ের মানুষরা এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। তাদের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালটি। বিগত সময়ে বিভিন্ন কারণে হাসপাতালটি অচলাবস্থা তৈরি হলে বর্তমান স্থানীয় সাংসদ অ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃ‌তি এম‌পির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ইউএইচএফপিও, আরএমও, চিকিৎসক এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারীদের আন্তরিক সেবাদানের প্রচেষ্টায় জনগণের মাঝে আস্থা ফিরে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে জনবল সংকটের কারণে এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় সেবা নিতে এসে হতে হয় নাজেহাল আর ভর্তি হওয়া রোগীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।  পলাশবা‌ড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার, প‌রিচ্ছন্নকর্মীর ২০/২১ জনের স্থ‌লে মাত্র ৫ জন প‌রিচ্ছন্ন কর্মী কাজ কর‌ছে। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সেগুলো জমে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে করে দূষিত হয়ে পড়ছে হাসপাতালসহ আশপাশের পরিবেশ। হাসপাতালের গে‌টের সামনে সব সময় ভাড়ায় চালিত গাড়ি দিয়ে ভর্তি থাকে। হাসপাতালের ভেতর ঢুকলেও চোখে পড়ে নোংরা, আবর্জনা। টয়লেটগুলো, এমনকি রোগীদের শয্যাও পরিস্কার করা হয় না ঠিকমত। ছয় দিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি থাকা নাম প্রকা‌শে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, হাসপাতালে দুর্গন্ধে থাকা যায় না। টয়লেট নোংরা, বেড নোংরা। ভর্তি থাকা আরেক রোগী বলেন, ‘আমি দুই দিন ধইরা হাসপাতালে ভর্তি আছি। এ পর্যন্ত একবার ডাক্তার পাইছি, ফ্যানগুলো নষ্ট হইয়া আছে, গরমে থাকা যাইতাছে না। সুস্থ হইতাছি নাকি অসুস্থ হইতাছি বুঝতেছিনা।’ এ বিষ‌য়ে সত্যতা স্বীকার ক‌রে আবা‌সিক মে‌ডি‌কেল অফিেসার (আরএমও) ডা. রাহাত আল রা‌জিব ব‌লেন, আমা‌দের প‌রিচ্ছন্নকর্মীর চরম সংকটে আছে। মাত্র তিজন প‌রিচ্ছন্নকর্মী দি‌য়ে চল‌ছে হাসপাতাল‌টি। যেখা‌নে প‌রিচ্ছন্নকর্মী, ওয়াডবয় ক্লিনারসহ ২০ জ‌নের অধিক জনবল থাকার কথা সেখা‌নে মাত্র ৫ জন। এতে স্বাস্থ্যসেবা দি‌তে সমস্যা হ‌চ্ছে। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার অবসর যাওয়ার ফ‌লে ড্রাইভার না থাকায় রোগী আনা নেয়ার কা‌জেও সমস্যা। হ‌চ্ছে। এ বিষ‌য়ে উপ‌জেলা স্বাস্থ্য ও প,প, কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান ব‌লেন, দীর্ঘ‌দিন থে‌কে ক্লিনার, ওয়ার্ডবয় ও প‌রিচ্ছন্নকর্মী সংক‌টে আছি। ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ‌কে অবগত ক‌রে‌ছি। আশা ক‌রি দ্রুত সমস্যার সমাধান হ‌বে। পলাশবা‌ড়ি উপ‌জেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ব‌লেন, বিষয়‌টি দুঃখজনক, মানুষের চিকিৎসা পেতে দ্রুত জনবল বাড়া‌নো দরকার।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২২ জুন-২০২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here