লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ের স্বামীর যাবজ্জীবন

0
214

এস এম বেলাল:

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী মাসু বেগমকে (২৫) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী কামাল হোসেনের (৩০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বুধবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। একই মামলায় আরও তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- কামাল হোসেনের বোন নাজমা বেগম (৩৩), মা আয়েশা বেগম (৬৩), ও ভাই মো. বাবুল (৩৮)। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কামাল হোসেন রামগতি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে। রায়ের সময় সে আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক রয়েছে। মামলার এজাহার, বাদী ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের দিকে জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের মেয়ে মাসু বেগমের সঙ্গে রামগতির উপজেলার চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে কামাল হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলের জন্ম হয়। কামাল হোসেন মাসু বেগমকে বিয়ের পর আরও দুটি বিয়ে করে। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী মাসুর সাথে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এর জেরে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন মাসুকে প্রায় সময় নির্যাতন করতো। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিসি বৈঠক হয়েছে। ২০২০ সালের ১২ আগষ্ট বিকেলে মাসু শ্বশুর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রচার করে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন আসে। পরে ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মাসুর মা বিবি ছায়েরা (৫৮) বাদী হয়ে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ এতে মাসু বেগমের স্বামী কামাল হোসেনকে প্রধান করে শাশুড়ি আয়েশা বেগম, ননদ নাজমা বেগম, ফাতেমা বেগম, ভাসুর মো. বাবুল ও জামাল এবং জামালের স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে আসামি করে আরও ২ থেকে ৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন রামগতি থানার সেই সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার। তিনি ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এতে কামাল হোসেন, নাজমা বেগম, আয়েশা বেগম ও মো. বাবুলকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে এবং মো. জামাল, ফাতেমা বেগম ও ফাতেমা বেগমকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন।  জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে ভিকটিম মাসু বেগমের স্বামী কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে। অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

 

আলোকিত প্রতিদিন/ ২২ জুন ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here