আলোকিত ডেস্ক:
গুরুবিদ্যা প্রফেশন। হাতে কলমের শিক্ষা। তবে আইন পাস করেও বার কাউন্সিলের নির্ধারিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই কপালে জুটে সনদ। এই সনদ না হলে আইনজীবী হিসেবে কোনো মক্কেলের পক্ষে ওকালতি করার সুযোগ নেই। একটা সময় ছিল আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য দুই-তিন বছর পরপর পরীক্ষা নেওয়া হতো। সেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন আসার পর এখন প্রতিবছরই নেওয়া হচ্ছে বার কাউন্সিলের সনদ পরীক্ষা। সনদ হলেও কিন্তু সরকার বা অন্য কেউ বেতন দেন না। তাহলে বেতন ছাড়াই এ প্রফেশনের সনদ পেতে এত বেগ কেন? প্রশ্ন অনেকেরই। সনদ না হলেও আইন পড়ে কর্পোরেট বা সরকারি অফিসের লিগ্যাল অফিসার হিসেবে চাকুরির সুযোগ আছে। তারপরেও আইন পড়ে ওকালতি করতে বেশি আগ্রহ দেখা যায় আইন শিক্ষার্থীদের। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, আগে ওকালতি, তারপর রাজনীতি। তা না হলে এই আইন পেশায় উন্নতি করা যাবে না। তিনি বলেন, অভিজাত পেশাগুলোর একটি হলো আইন পেশা। এটি একদিকে যেমন সম্মানের, তেমনি দায়িত্বের। এক সময় বলা হতো, ‘যার নাই কোনো গতি, সেই করে ওকালতি’। বর্তমানে সেটি এভাবে পরিবর্তন হয়েছে- ‘যার আছে সব গতি, সে হয় আইনজীবী’। তিনি বলেন, ওকালতি হচ্ছে নোবেল প্রফেশন। এই প্রফেশনে আসতে হলে অবশ্যই জেনে শুনে ভালো স্টাডি করে আসতে হবে। কারণ, স্টাডির বিকল্প নেই এখানে। একজন আইনজীবী যত পড়বেন আইনে ততই সমৃদ্ধ হবেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাকিল আহমাদ ঢাকা মেইলকে বলেন, আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বার কাউন্সিলের লোকবল স্বল্পতা ও গুরুত্ব কম দেওয়ার কারণেই এতে বেগ পেতে হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বলা হয়েছে, বছরে দুটি পরীক্ষা নেওয়ার কথা। কিন্তু অনেক বছর হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। প্রয়োজনে পরীক্ষার সাবজেক্ট বাড়িয়ে বা কঠিন করে হলেও বছরে দুটি পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এমনভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে যেন প্রথম পরীক্ষা দিয়েই সফলকাম হওয়া যায়। একইসঙ্গে প্রস্তুতি ভালো নিলে প্রফেশনে গিয়েও ফল পাওয়া যায়। বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, প্রতি ৬ মাস পর পর বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্তির পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও ২০১৭ সালের পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালে। এরপর ২০২১ ও ২০২৩ সালে দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষা সঠিক সময়ে না হওয়ায় আন্দোলন করেছে আইন শিক্ষানবিশরা। ২০১৭ ও ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সনদের দাবিতে টানা ২৮তম দিন প্রতীকী অনশন পালন অব্যাহত রেখেছিলেন। সে সময় টানা ২৮তম দিন রাস্তায় অবস্থান করেন তারা। বরিশাল বারের ইলোরা ইয়াসমিন ও বগুড়া বারের জাহাঙ্গীর মারা যান। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, প্রতি ৬ মাস পর পর বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্তির পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও ২০১৭ সালের পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালে। এরপর ২০২১ ও ২০২৩ সালে দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ অবস্থা দুর করতে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করবো এখন থেকে প্রতি বছর দুটি করে পরীক্ষা নেব। এতে করে আইনশিক্ষার্থীরা আরও উপকৃত হবেন।