সফি সুমন:
আশুলিয়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহের জেরে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা ঘটনার প্রধান আসামী মোঃ ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাবের একটি টিম। ২৩ জুন শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়ার বাইশমাইল এলাকার র্যাব-৪ ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪ এর কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খাঁন। র্যাব-৪ জানায়, র্যাব সদর দপ্তররের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৪ এবং র্যাব-১৩ এর যৌথ আভিযানিক দল আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী ফারুককে রংপুরের পীরগাছা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গত ২০ জুন দুপুরে আশুলিয়ার গাজীরচট নয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ তলা বাড়ির ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে পোশাক শ্রমিক শিমু আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং এ বিষয়ে ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ হতে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়, যার প্রেক্ষিতে র্যাব-৪ ছায়া তদন্ত শুরু করে। ভিকটিম শিমু আক্তার গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। আসামী ফারুকও একই এলাকার বাসিন্দা। গত ০৬ বছর পূর্বে আসামী মোঃ ফারুক হোসেনের সাথে তার পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় এবং বৈবাহিক জীবনে তাদের ০৪: (চার) বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারা দুজনেই আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার একটি গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ভিকটিম ও তার স্বামী আশুলিয়ার গাজীরচট নয়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে এবং পাশেই আরেকটি বাড়িতে ভিকটিমের বড় বোন লাবনী আক্তার ভাড়া থাকতো। গত ১৯ জুন রাতে ভিকটিমের বড় বোনের বাসায় রাতের খাবার শেষে ভিকটিম ও তার স্বামী ফারুক তাদের নিজ বাসায় চলে যায়। পরের দিন সকালে ভিকটিমের বড় বোন কর্মস্থলে একই সাথে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে ডাকার জন্য তাদের দরজার সামনে এলে দরজা বাহির হতে লাগানো অবস্থায় দেখতে পায়। তখন ভিকটিমের বড় বোন ডাকা-ডাকি করলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে এক পর্যায়ে ভিকটিমের বড় বোন লাবনী আক্তার ঐ বাসার দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে শিমু আক্তারের রক্তাক্ত মৃতদেহটি ওড়না দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পায়। পরে এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। যার প্রেক্ষিতে র্যাব উক্ত হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে গোপন সম্পর্কে আছে এই সন্দেহের জেরে ভিকটিমের সাথে তার পারিবারিক কলহ প্রায় লেগেই থাকতো। ঘটনার দিন ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে পিছন দিক হতে হাতের কাছে থাকা ছুড়ি দিয়ে ভিকটিম কে গলায় ছুরিকাঘাত করে এবং ভিকটিমের গলা প্রায় দ্বি-খন্ডিত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর লাশটি বাথরুমে ওড়না দিয়ে ডেকে ০৪ বছরের ছোট সন্তানসহ অন্যত্র আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে পলায়ন করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ জুন-২০২৩/মওম