স্পোর্টস ডেস্ক:
সত্যিই আউট নাকি প্রতারণ! রোববার (২ জুলাই) জনি বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল লর্ডস। ৫২তম ওভারে ক্যামেরন গ্রিনের বাউন্সার ছেড়ে পিছনের দিকে না তাকিয়েই অন্যপ্রান্তে দাঁড়ানো বেন স্টোকসের সঙ্গে আলোচনার জন্য হাঁটা দেন বেয়ারস্টো। সুযোগ বুঝে কিপার অ্যালেক্স কেরি সরাসরি থ্রোয়ে ভেঙে দেন উইকেট। আউটের আবেদনে মেতে ওঠেন অস্ট্রেলিয়ার বাকি প্লেয়াররাও। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর স্টাম্প আউটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার। নিয়ম অনুযায়ী, বেয়ারস্টোর আউট অবশ্য সঠিক সিদ্ধান্তই। কারণ, তিনি যখন ক্রিজ ছেড়েছিলেন, বল তখনও ডেড হয়নি। ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের জন্য টুইটে প্রশংসাও করেছেন কেয়ারির। তবে প্রশ্ন উঠছে অজিদের স্পোর্টসম্যানশিপর নিয়ে। স্তম্ভিত স্টোকসকে দেখা যায় প্রতিপক্ষ অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বচসায় জড়াতে। ব্যাট করতে নেমে স্টুয়ার্ট ব্রড অজি উইকেটরক্ষক কেয়ারিকে টিপ্পনী করেন, ‘এমন কলঙ্কিত কাণ্ডের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে তুমি।’ গ্যালারিতেও বিতর্কের আঁচ ছড়াতে সময় লাগেনি। বার্মি আর্মি ব্রিগেড স্লোগান দিতে থাকে, ‘এই সেই চেনা অস্ট্রেলিয়া- প্রতারণা যাদের মজ্জাগত বিষয়।’ লাঞ্চের বিরতিতে এই নিয়ে লর্ডসের লাউঞ্জে থাকা এক ভিআইপি সদস্যের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন উসমান খাওয়াজা। ডেভিড ওয়ার্নারকে দেখা যায় সদস্যদের কিছু বলতে। সেই সময় কামিন্সদের উদ্দেশে দেয়া হয় টিটকিরি। খেলার পরের সময়টাতেও দর্শকেরা দুয়ো দিয়ে যান অস্ট্রেলিয়ানদের। সেসময় ধারাভাষ্যে থাকা সাবেক দুই ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক আথারটন ও ওয়েন মর্গ্যান অবশ্য অসাবধানতার জন্য দায় দেন বেয়ারস্টোকেই।বেয়ারস্টো আউট নিয়ে আপত্তি নেই বেন স্টোকসেরও। তবে ক্রিকেটীয় চেতনার কথা টেনেই বিবিসি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বললেন, এভাবে জিততে চান না তারা। স্টোকস বলেন, “আম্পায়ার ওভার ডেকে ফেলেছেন, এটা কখন থেকে গণ্য হবে? অন-ফিল্ড আম্পায়াররা যখন নড়াচড়া শুরু করবেন, সেটিই কি ওভার হিসেবে ধরে নেয়া হবে? নিশ্চিত নই আমি। জনি (বেয়ারস্টো) ক্রিজে ছিল, আবার বাইরে গেছে… এটা আউট কি না, এই তর্ক করছি না, কারণ এটা আউট। যদি আমি ঘটনার অন্য পাশে থাকতাম, তাহলে আম্পায়াদের ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতাম এবং জিজ্ঞেস করতাম, তারা ‘ওভার’ ডেকেছেন কি না এবং খেলাটির স্পিরিট নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতাম এবং ভাবতাম যে, এরকম কিছু আমি করতে চাই কি না। অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি ছিল ম্যাচ জয়ের মুহূর্ত। কিন্তু আমি কি এভাবে ম্যাচ জিততে চাইব? আমার কাছে উত্তরটি হলো, ‘না’। প্যাট কামিন্সের জায়গায় তিনি থাকলে আউটের আবেদন প্রত্যাহার করতেন কি না, এই প্রশ্নে স্টোকর উত্তর, ‘হ্যাঁ।’ তবে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক কামিন্স স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, এখানে ক্রিকেটীয় চেতনার বিরোধী কিছু দেখেন না তিনি। কামিন্স বলেন, ‘কেয়ারি বেশ কয়েকবারই দেখেছে যে সে (বেয়ারস্টো) বাইরে যাচ্ছে। তিন-চার বল আগেও দেখেছে। (আউটের সময়) সে একটুও থমকে থাকেনি, বল ধরেই সরাসরি স্টাম্পে থ্রো করেছে। আমার মতে, এটা পুরোপুরিই ফেয়ার প্লে। নিয়মই তো এমন। অনেকে হয়তো একমত হবেন না। তবে আমি এটাকে এভাবেই দেখি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ জুলাই ২৩/ এসবি