মৌলভীবাজারের জুড়ীর আদা লেবুর চাহিদা দেশ বিদেশে

0
3478

এস. এম. জালাল উদদীন :

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা বনবিভাগ ও স্থানীয় বিভিন্ন আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পাহাড়ি টিলায় সারিবদ্ধ গাছের ডালে ডালে দোলছে এক ফসলী ও বারোমাসী বিভিন্ন জাতের আদা লেবু। এ অঞ্চলের আদা লেবুর স্বাদ ভালো হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশ ও বিদেশে। পাহাড়ী টিলাগুলোতে কমলা, বাতাবী লেবু, আদা লেবুসহ লেবু জাতীয় ফসল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। লেবু জাতীয় ফসল চাষ এসব এলাকার জনবসতিদের পেশায় পরিণত হয়ে উঠেছে। অনেকেই লেবু জাতীয় ফসল চাষের মধ্যদিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বছরই এক একটি বাগান থেকে লাখ লাখ টাকার ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়। এবারে খরা থাকায় আদা লেবুর বাম্পার ফলন হয়নি। অন্যান্য বছরের মতো আকারও বড় হয়নি। আদা লেবুসহ লেবুজাতীয় ফসলের ফুল আসার আগে থেকেই দেখা দিয়েছিল তীব্র খরা। খরায় পানি সেচের কোন সুযোগ সুবিধা না থাকায় চাষীরা ছিল শঙ্কায়। তবে কৃষিবিদরা পানির বোতলে ছিদ্র করে গাছের গোড়ায় বেঁধে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চাষীদের। পানির বোতল ছিদ্র করে গাছের গোড়ায় রাখলে অনেকটাই পানির অভাব পূরণ হবে। এতে সেচের অভাবে গাছ মারা যাবে না, ফলনও মোটামুটি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জানা গেছে, আদা একটি লেবু জাতীয় ফসল। এটি মাছ ও মাংস রান্নায় সাধারণত বেশ উপযোগী। মাছ ও মাংস রান্নায় স্বাদ মনোমুগ্ধকর হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে দেশ ও বিদেশে। পাইকারী ক্রেতারা লাঠিটিলা থেকে আদা লেবু সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়ের জন্য নিয়ে যায়। আবার অনেকেই বিদেশে থেকে ফিরে আদা লেবু খোঁজে ছুটে আসছে, অনেকে বিদেশে আত্মীয় স্বজনদের বিভিন্ন ভাবে পাঠাচ্ছে। কেউ কাঁচা আবার কেউ শুকিয়ে পেকেটিং করে বিদেশী বন্ধুবান্ধবদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে বলে শুনা যাচ্ছে। এতে কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ১৪০ হেক্টর জমিতে লেবু জাতীয় ২ হাজার ২৫০টি বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ বাগান রয়েছে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লাঠিটিলা বন্য এলাকায়। কৃষি বিভাগের লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের কে প্রশিক্ষণ, সার ও চারা প্রদান এবং স্প্রে মেশিন প্রদানের মাধ্যমে নতুন নতুন বাগান সৃজন করা হচ্ছে। জরিছড়া গ্রামের চাষী কোকিল মিয়া (৫০) বলেন, ফুল আসার সময়ে খরা ছিল। সেচ দেয়ার নেই কোন ব্যবস্থা। এজন্য এবারে আদার ভালো ফলন হয়নি। আকারও ছোট। সঠিক সময়ে সেঁচ দিতে পারলে বাম্পার ফলন পাওয়া যেতো। জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খান “আলোকিত প্রতিদিন” কে মুঠোফোনে বলেন, জুড়ীর কমলা ও আদা লেবুর সুনাম রয়েছে দেশ বিদেশে। তিনি বলেন, এবারে ফুল আসার আগে থেকেই খরা ছিল। সরকারি ভাবে সেচের জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে কোন সুযোগ সুবিধা নেই। পানির অভাব পূরণ করতে আমরা চাষীদের পানির বোতল ছিদ্র করে গাছের গোড়ায় রাখার পরামর্শ দিয়েছি। এতে একেবারে ফুল ঝরে যাওয়ার চেয়ে কিছুটা রক্ষা হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৬ জুলাই ২৩/ জেএইচআর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here