স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্বকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

0
188

আলোকিত ডেস্ক:

স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বাংলাদেশ নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় থাকবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি পাঁচটি সুপারিশ তুলে ধরেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে একে অপরকে সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আহ্বানও জানান তিনি। হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি প্যানেল ডিসকাশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা একে অপরকে সাহায্য করি এবং আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। সুপারিশ হিসেবে তিনি বলেন, ভবিষ্যত স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতিগুলির জন্য বর্ধিত প্রস্তুতি এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ক্রিয়াকলাপগুলোকে আরও সমন্বয় করতে হবে। দ্বিতীয় সুপারিশে তিনি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ নির্মূল করতে এক সঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন এবং ক্রমবর্ধমান অসংক্রামক রোগের বোঝা মোকাবিলায় অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময়ের পরামর্শ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের মূলধারার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত এবং ডুবে যাওয়া এবং দুর্ঘটনার মতো মারাত্মক জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতেও সহযোগিতা করা উচিত।’ চতুর্থত তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসা শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য আমাদের সম্মিলিত সুযোগ-সুবিধাগুলোকে একত্রিত করতে হবে, বিশেষ করে জলবায়ু প্রভাবের কারণে গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের মোকাবিলায় বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। তার চূড়ান্ত সুপারিশে তিনি বলেছিলেন, আমাদের অবশ্যই আমাদের মা, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যকে এসডিজি-৩ এর সঙ্গে আমাদের অর্জনের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, যার লক্ষ্য সমগ্র অঞ্চল জুড়ে সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ প্রচার।অনুষ্ঠানে বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে গ্রামের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করেছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করি। আরও আড়াই হাজারটি কমিউনিটি ক্লিনিকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করে এবং আমাদের স্থাপিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। এতে করে গ্রামের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আবারও ক্ষমতায় এসে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালু করি। সে সময় সবমিলিয়ে সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা শুরু হয়। বর্তমানে সেগুলো থেকে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সবার পাশাপাশি মানুষকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্য সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয় যে, জাতিসংঘ আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে এ উদ্ভাবনী চিন্তাকে বিশ্বের সব দেশকে অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য অর্জন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন-২০১৮ পাস করেছি। শ্রমজীবী মানুষকে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। চার মাসের বেতন-ভাতাসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল।মানুষের বর্তমান গড় আয়ু ৭৩ বছর জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৬ সালে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৯ বছর। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হয়েছে। আমরা ৯৭ শতাংশ মানুষের কাছে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা পৌঁছে দিয়েছি। ইউনিয়ন পর্যায়ে দক্ষ দাত্রী দিয়ে প্রসব সেবা দেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা বাল্যবিবাহে নিরোধের ব্যবস্থা নিয়েছি। বাল্যবিবাহ যাতে কম হয়, সেজন্য জনসচেতনতা তৈরি করছি এবং মেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১১ জুলাই ২৩/ এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here