বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা রণক্ষেত্রে পরিণত

0
140

মাজেদুর রহমান:

মঙ্গলবার ১৮জুলাই ২০২৩ বগুড়ায় এক দফা দাবিতে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়েছে।
বেলা আনুমানিক ১২:৪৫ মিনিটের দিকে বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে বিএনপির মিছিল পৌছে।এই মিছিলটি সাতমাথা অভিমুখে যাত্রা করতে চায়।কিন্তু একই সময়ে সাতমাথায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ চলছিল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের মিছিলটি নিয়ে সাতমাথার দিকে না যেতে বলে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে বিএনপির মিছিলে হামলা চালিয়েছে এবং গুলি করেছে। পরে তারা দলীয় কার্যালয়েও কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছুড়েছে। পুলিশের এই গুলি ও হামলায় বিএনপির ২০ থেকে ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন,এক দফা দাবিতে বিএনপির পদযাত্রা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত। আগেই কর্মসূচির রুট পরিকল্পনা পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচি ভন্ডুল করতে আওয়ামী লীগ শহরে শান্তি সমাবেশের নামে পাল্টা কর্মসূচি দেয়। আওয়ামী লীগের ইন্ধনে বিনা উসকানিতে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,শান্তিপূর্ণ ভাবেই পদযাত্রা হচ্ছিলো। হঠাৎ মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা করা হয়।পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ সহ যা যা করার,আমরা সেটা করেছি। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় পরে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছোঁড়ে।এতে নারী পুলিশসহ প্রায় ১০জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টায় শহরের সাতমাথায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হন। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসানের নেতৃত্বে মিছিল করে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়। সাতমাথা-থানা রোড ও বড়গোলা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের মিছিল।অপরদিকে,বিএনপির নেতা-কর্মীরা শহরের বনানী ও মাটিডালি থেকে পৃথকভাবে পদযাত্রা বের করেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বগুড়ার বনানী থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদারের নেতৃত্বে পদযাত্রা নিয়ে শহরের সাতমাথার দিকে এগোতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। বেলা পৌনে একটার দিকে ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে পৌঁছালে পদযাত্রায় অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা সাতমাথার দিকে এগোতে থাকেন। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রথমে লাঠি,বিএনপির দলীয় পতাকা যুক্ত লাঠি,প্ল্যাকার্ড এবং পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ বেশ কিছুক্ষণ শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালায়।বেগতিক দেখে পুলিশ পিছু হটতে থাকে।এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পিছু ধাওয়া করলে,পুলিশ পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।এবং একপর্যায়ে লাঠিপেটা করে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিকাল ৩টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে।তবে বিএনপি ও পুলিশ সংঘর্ষে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৯ জুলাই ২৩/এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here