নাজমুল হাসান :
দেবিদ্বার পৌরসভার নির্বাচনে গত সোমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে শেষ পর্যন্ত জয় পেলেন নৌকা প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম । তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী। রাত ৮ টার সময় রিটার্নিং অফিসার ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে নৌকা প্রতীক পায় ১২ হাজার ১৪৯ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবুল কাশেম (সাবেক চেয়ারম্যান) ভোট পায় ৭ হাজার ৭৭১ ভোট, নৌকা প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবুল কাশেম (সাবেক চেয়ারম্যান) এর চেয়ে ৪ হাজার ৩৭৮ ভোট বেশি পেয়ে নৌকা প্রতীক বিজয় লাভ করেন। পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর যারা নির্বাচিত হয়েছেন যারা – ১ নং ওয়ার্ড- মো. আবদুল কাদের, ২ নং ওয়ার্ড আমির হোসেন, ৩ নং ওয়ার্ড সৈয়দ নাইমুর রহমান, ৪ নং ওয়ার্ড- মো. আবুল হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ড- মো. বাশার সরকার, ৬ নং ওয়ার্ড- মো. আলিম, ৭ নং ওয়ার্ড- বাছির উদ্দিন, ৮ নং ওয়ার্ড মো. মজিবুর রহমান, ৯ নং ওয়ার্ড- মো. আবু সাইদ। ৯ ওয়ার্ডে সমন্বিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৩ জন- ( ১,২,৩ নং ওয়ার্ড-মোসা. কামরুন্নাহার, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড-শামীমা আক্তার, ৭, ৮,৯ নং ওয়ার্ড- শারমিন আক্তার ) গতকাল দেবিদ্বার উপজেলা হলরুমে রাত ৯ টার দিকে নির্বাচনের ১৪ টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন রিটানিং সিনিয়র অফিসার মো. মঞ্জুরুল আলম। এতে নৌকার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম কে সরকারি এবং বেসরকারি ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এই ফলাফল সার্বিকভাবে ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশের কারণে। বাংলাদেশের মধ্যে এই পৌরসভার নির্বাচনটি ছিল সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ একটি মডেল নির্বাচন। তবে প্রতিটা মানুষের কাছে ভোট মানেই কেন্দ্র দখলের অভিযোগ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, কম ভোটার উপস্থিতি—এই পরিস্থিতির বিপরীত চিত্র দেখা গেছে অনেক ভোট কেন্দ্রেই। গতকাল সকাল ৮ টায় ভোট শুরু হওয়ার আগেই কিছু কেন্দ্রে ছিল ভোটারের দীর্ঘ লাইন। কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতি এবং কয়েকজন প্রার্থীর এজেন্ট না থাকা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি ছিল শান্তিপূর্ণ এবং ভোট চলাকালে কোথাও সহিংসতা ঘটেনি। বর্তমানে পৌরসভায় ৪৪ হাজার ৫৮৭ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৪শ ৯৮ জন ও নারী ভোটার ২২ হাজার ৮৯ জন। পৌরসভার ১৪ ভোট প্রদান করেছেন নারী পুরুষ উভয় মিলে ২৯৫৬৫ জন ভোটার। নৌকা প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম ১২ হাজার ৯৩৪ ভোট আর আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ফল ঘোষণার পর নির্বাচিত সাইফুল ইসলাম শামীম সাংবাদিকদের বলেন, আমি একা মেয়র না, আমার সাথে আমার পৌরবাসীর সবাই মেয়র, আমি আজ তাদের ভোট এবং ভালোবাসার কারণে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আপনাদের সবার সহযোগিতায় একটি নতুন মডেল শহর করে দেব এই এই পৌরসভা কে। আমি সবার সহযোগিতা চাই।’ তিনি আরো বলেন, এই নির্বাচনটি আমার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। আমি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টার আগ পর্যন্ত ৯ টি ওয়ার্ডের ১৪টি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে প্রিজাইডিং অফিসার কে অবহিত করেছি। দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের প্রতিবেদক কয়েকটি কেন্দ্রের ভোটারদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে, ইভিএম মেশিন ভোট প্রদান ছিলো ধীরগতি, অপর্যাপ্ত আলো অভাব , আঙ্গুলের ছাপের সমস্যা, ইভিএম মেশিন বিকল হয়ে যাওয়া সিস্টেমটি নতুন হওয়ায় ভোটারদের মাঝে ছিল অজানা এক নতুন পদ্ধতি। দীর্ঘ ২২ বছর পর ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রেই ছিল ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। শারীরিক প্রতিবন্ধী, অসুস্থ, অতি বয়স্ক ভোটারদেরও ভোট দিতে দেখা গেছে। নতুন ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। ভোট শুরু হওয়ার কথা সকাল ৮টায়। কিন্তু সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর কয়েকটি কেন্দ্রে দেখা যায় ওই সময়েই ভোটকক্ষের সব কটিতেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৯ জুলাই ২৩/এসবি