মো. জিয়াউল ইসলাম:
পাথরঘাটার হাজারো জেলেরা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রবিবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাত থেকে সমুদ্রে ইলিশের সন্ধানে যাচ্ছে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এই নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকেই পাথরঘাটার হাজারো জেলে মাছ শিকার যাচ্ছে সমুদ্রে। এই ৬৫ দিন পাথরঘাটার উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার জেলে অলস সময় কাটাচ্ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষ মুহূর্ত কর্মচাঞ্চল্য ফিরছে জেলেদের মাঝে। দীর্ঘদিন সাগরে মাছ না ধরায় জেলেদের জালে বিপুল মাছ ধরা পড়ার আশা করছেন জেলেরা। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বরগুনা জেলায় নিবন্ধিত জেলে মধ্যে সবচেয়ে বেশি জেলে রয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলায়। এ উপজেলায় ১৬ হাজার ৮২০ জন নিবন্ধিত জেলে ।যাদের অধিকাংশই সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। রবিবার (২৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা নিজ নিজ এলাকা থেকে এসে মৎস্য আড়তগুলোতে জড়ো হচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই এখন বরফ নেওয়ার জন্য ট্রলার নিয়ে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ ট্রলার মেরামত শেষে এখন রঙের কাজ করছেন, আবার কেউ কেউ জাল বুনছেন, কেউ কেউ ট্রলারে জাল, কন্টেইনার ও গ্রাফিসহ মালামাল উঠাচ্ছেন। কেউ রসদ কেনাকাটা ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলেপল্লীতে বাদুরতলার গিয়ে কথা হয় শাহিন মাঝি, জাকিরসহ বেশ কয়েকজন জেলের সাথে তারা বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আমাদের খুবই কষ্টে দিন কাটছে। একদিন সাগরে না গেলে আমাদের সংসার চলে না। মাহজনের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা ধার নিয়েছি। সুদেও টাকা নিয়া সংসার চালাইতে হচ্ছে। এখন সাগরে মাছ ধরে, সেই দেনা ও সুদের টাকা শোধ করতে হবে। জেলেরা আরও বলেন, আমাদের একেকজনের সংসারে ৪-৫ জন লোক আছে। সরকার আমাদের যে চাউল (চাল) দেয়, তা দিয়ে এতদিন চলা যায় না। আমরা সরকারের কাছে চাউলের পাশপাশি তেল, ডাল ও কিছু নগদ টাকা বরাদ্দের দাবি জানাই। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বললেন, সাগরে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে পালন করা হয়েছে। এদিকে নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের সরকারিভাবে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম বন্ধ থাকায় ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হলে কাক্ষিঙত জেলেরা ইলিশ পাবে। আজ মধ্যরাত থেকে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মৎস্য আহরণসহ পরিবহন ও সংরক্ষণে আর বাধা নেই।
আরও পড়ুন: পাথরঘাটায় ট্রলার ডুবিতে জেলে নিখোঁজ
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৩ জুলাই ২৩/এসবি