আবারও দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, সংঘাতের আশঙ্কা

0
326
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোগো/ ছবি: সংগৃহীত

 

 

ঘন ঘন কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ বড় কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছে

‘বিএনপির সহিংসতা, অগ্নিসন্ত্রাস আওয়ামী লীগ ভোলেনি, জনগণও ভুলতে পারেনি’

আলোকিত ডেস্ক:

দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ঢাকায় কাল সমাবেশ করবে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার পতনের ‘একদফা ঘোষণার পর ঢাকায় ঘন ঘন কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি। তাদের নজরে রাখতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও একই দিনে কর্মসূচি দিয়ে ‘সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে। বিএনপি কোন সংঘাত করবে না বললেও আওয়ামী লীগ তা বিশ্বাস করতে পারছে না। ক্ষমতাসীনদের ধারণা, বিএনপি যেকোন সময় অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে। বিএনপির এই পরিকল্পনা রাজধানীকেন্দ্রিক হবে। তবে বিএনপির একাধিক নেতারা বলেছে, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী। এদিকে ঢাকায় বিএনপির যেকোন কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ ও বড় কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছে।  এদিকে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা রয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই দিনে বড় দুই দলসহ মোট তিন দলের কর্মসূচিতে রাজপথ দখল হয়ে যাচ্ছে; ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর। এর আগে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই বিএনপি করেছে পদযাত্রা আর আওয়ামী লীগের ছিল শোভাযাত্রা। ওইদিন রাজপথ এক অর্থে এই দুই দলের দখলেই ছিল। যানজটে সাধারণ মানুষের চলাচল একরকম স্থবির হয়ে যায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দুই দিনে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, কোথাও বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে হাতহতের ঘটনাও ঘটে। গত ডিসেম্বর থেকেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ঢাকাসহ সারা দেশে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে আসছে। সর্বশেষ ১২ জুলাই ঢাকায় দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে দুটি পাল্টাপাল্টি বড় সমাবেশ করেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের মধ্যে এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হয়। তবে কোন সংঘাত বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইট সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার তারুণ্যের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। বিএনপি নয়াপল্টনে অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, যেখানে পুলিশের অনুমতি পায় সেখানেই মহাসমাবেশ করবে।বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবারের সমাবেশে ‘অকল্পনীয় লোক সমাগম’ করার প্রস্তুতি রয়েছে। ওই মহাসমাবেশ থেকে পরিস্থিতি বুঝে ঢাকাকেন্দ্রিক সাত দিনের কর্মসূচি দেয়া হতে পারে। নেতাকর্মীদের এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। গত শনিবার সোহরাওয়ার্দীতে যোগ দেয়া অনেক নেতাকর্মী এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে দাবি করছে সূত্র। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সমাবেশ হবে ‘শান্তিপূর্ণ’। বিএনপির সঙ্গে ‘সহাবস্থানে’ থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা নেতাকর্মীদের দেয়া আছে। তবে বিএনপি কোন সংঘাত-সহিংসতা করতে চাইলে তা মোকাবিলায় ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতেও বলা আছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোন সংঘাত চায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তবে বিএনপিকে বিশ্বাস কী?’ বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘তারা সরকার পতন ঘটাবে, সরকার উৎখাত করবে, একদফা ঘোষণা দিয়েই তারা নেমেছে। সমাবেশ করে কী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা যায়? নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র আছে। অতীতে তারা কী করেছে। বিএনপির সহিংসতা, অগ্নিসন্ত্রাস আওয়ামী লীগ ভোলেনি, জনগণও ভুলতে পারেনি। ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির ঘন ঘন কর্মসূচিতে জনগণ আতঙ্কে আছে। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে রাজপথে থাকবো। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির সব কর্মসূচির ওপর নজর রাখবো, রাজপথে থেকে সহাবস্থানের মাধ্যমে। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘আমাদের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে প্রতিদিনই বলেন। তার বাইরে আর কী বলার আছে। তবে এটুকু বলতে পরি, বিএনপির আন্দোলনকে হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। তারা যেকোন সময় রাজধানী দখলের পাঁয়তারা করতে পারে। বিএনপির মিত্ররা ছাড়াও আরও কিছু দল এই আন্দোলনে শরীক হতে যাচ্ছে বলেও একাধিক সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা আরও বলেন, ‘আর কয়েক মাস পরই নির্বাচন। আমরা ভালোভাবে একটা নির্বাচন দিতে চাই। সেখানে বিএনপি আসুক, না আসলেও ভোট হবে। তবে দশম সংসদের মতো বাসে আগুন দিয়ে, মানুষ মেরে ঢাকাকে অচল করতে দেয়া হবে না। এজন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার যা যা করা দরকার সবই করবে। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে সহিংস কর্মকাণ্ডকে বিন্দু পরিমাণ টলারেট এবার করা হবে না।

আরও পড়ুন: দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৬ জুলাই ২৩/এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here