পাথরঘাটায় প্রশাসনের অভিযানে ক্লিনিকে জরিমানা, সিলগালা

0
442

মো. জিয়াউল ইসলাম:

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ও রায়হানপুর ইউনিয়নের তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল, একটি ডেন্টাল কেয়ার ক্লিনিক ও দুইজন ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানাসহ লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠান গুলো সিলগালা করা হয়েছে। গত শনিবার পাথরঘাটায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের যৌথ অভিযানের পর চিকিৎসা প্রার্থীরা এ স্বস্তি প্রকাশ করেন। অভিযান পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকরা হলেন, লেমুয়া জেনারেল হাসপাতাল, এলাহী জেনারেল হাসপাতাল, সার্জিকেয়ার হাসপাতাল ও আয়শা ডেন্টাল কেয়ার ক্লিনিক এবং ভুয়া চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ও শওকত মাহমুদ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাসুদ রানা বলেন, ওই বেসরকারি হাসপাতাল, ডেন্টাল কেয়ার ও ভুয়া চিকিৎসকরা দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এ সব অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারকের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসরা উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও বলেন, উপজেলার অন্যান্য স্থানের লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধেও এ অভিযান পরবর্তীতে অব্যাহত থাকবে। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রায়হানপুর ইউনিয়নে লেমুয়া জেনারেল হাসপাতালটির লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ওই প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযানের সময় এমবিবিএস ডাক্তারের পরিবর্তে ডিএমএফ নামের ডাক্তার দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালনা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই লেমুয়া জেনারেল হাসপাতালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই ভাবে কাকচিড়া বাজারে এলাহী জেনারেল হাসপাতালটির লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এ প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে এ হাসপাতালে সার্বক্ষণিক একজন এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছেন। সার্জিকেয়ার হাসপাতালে অপারেশনের রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও ওই হাসপাতালে সার্বক্ষণিক এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এছাড়া এক্সরে রুম সঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি। এতে ওই এক্সরে রুমটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এসব অব্যবস্থাপনায় ওই সার্জিকেয়ার হাসপাতালটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও আয়শা ডেন্টাল কেয়ারে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে দন্ত বিভাগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। একই ভাবে কাকচিড়া বাজারে রফিকুল ইসলাম ও শওকত মাহমুদ নামে দুইজন ভুয়া ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ ঘটনায় আয়শা ডেন্টাল কেয়ারকে ৫ হাজার টাকা ও রফিকুল ইসলামকে ভুয়া ডাক্তারের অভিযোগে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে অভিযানের সময় শওকত মাহমুদ নামের একজন ভুয়া ডাক্তার কাকচিড়া বাজারের চেম্বার থেকে পালিয়ে গেছেন। অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করে ওই এলাকার চিকিৎসা প্রার্থীরা বলেন, সার্বক্ষণিক ডাক্তার বিহীন বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন ও ভুয়া ডাক্তার চেম্বারে চিকিৎসা নিতো স্থানীয় মানুষজন। ওই লাইসেন্স বিহীন হাসপাতাল ও ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করায় এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু বলেন, ভুয়া ডাক্তার ও লাইসেন্স বিহীন হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় পাথরঘাটার ইউএনও সুফল চন্দ্র গোলদার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আগামী দিনেও স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানো ও সহজলভ্যতা দিকে নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের নেতৃত্বে ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল, ডেন্টাল কেয়ার ও ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া এ ছাড়া পাথরঘাটাবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৭ জুলাই ২৩/এসবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here