বিশেষ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ মহিলা কলেজের স্নাতক ৩য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণণের অভিযোগে মোঃ সিরাজুল হকের ছেলে আলোচিত চাঁদাবাদ মোঃ আবদুল আহাদ প্রঃ আদু’র হাতে গড়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ধর্ষক রাকিবুল ইসলাম আদনানকে গ্রফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের আগে ধর্ষক আদনান জানান, তিনি তার ওস্তাদ আবদুল আহাদ এর পরামর্শেই ধর্ষণটি করেছেন। এমন পরামর্শ গ্রহণ করায় তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ভুল বলেও তিনি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদনানের ওস্তাদ আবদুল আহাদও নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অপরাধ কর্মকান্ড হল- অটো রিক্সার টোকেন বাণিজ্য করা। অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি করার সময় বায়েজিদে গত বছর তিনি জনতার হাতে হাতেনাতে ধরাও পড়েছিলেন। কিন্তু অর্থের প্রভাব ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সে যাত্রায় নিজেকে আড়াল করে নেন তিনি। তারপরও থেমে নেই তার নিত্যদিনের চাঁদাবাজি। বায়েজিদের সাধারণ রিকশাচালক যেন তার কাছে অসহায় ও জিম্মি। তাকে বায়েজিদের দ্বিতীয় সরকার বললেও ভুল হবে না- এমনটাই দাবি জনসাধারণের। আরও জানা যায়, আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটিত করায় ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামী থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার এফআইআর নং-৪৭/২২০।
২২ জুলাই চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার মিনারের মোড়স্থ পূর্ব ফিরোজ শাহ্ কলোনীর মুন হাউজের বাসিন্দা মৃত তাহের হোসেনের কন্যা নার্গিস আক্তার আকবর শাহ্ থানায় ধর্ষনের মামলা করেছেন। মামলার আসামি হলেন- বায়েজিদ এলাকায় ব্যাটিরী চালিত রিকশার টোকেন বানিজ্যের মূল হোতা ও চিহ্নিত চাঁদাবাজ মোঃ শামসুর এর পুত্র রাকিবুল ইসলাম আদনান।
গত মঙ্গলবার আসামি রাকিবুল ইসলাম আদনানকে গ্রেপ্তার করে আকবর শাহ্ থানা পুলিশ। তিনি চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকার বাসিন্দা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, রাকিবুল ইসলাম আদনান ওই কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই আদনান তার বিভিন্ন পোষ্টে প্রশংসা মূলক কমেন্ট লাইক দিতে থাকেন ও দীর্ষদিন ধরে নানা ধরনের প্রশংসা করতে থাকে। একপর্যায়ে আদনান শিক্ষার্থীর পরিবারের খোঁজ খরব নিতে থাকে। গেল মার্চে আদনান ওই শিক্ষার্থীর সাথে ঘুরতে চাইলে শিক্ষার্থীর অপারগতায় আর তাদের দেখা করা হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৪ তারিখ বিকেল পৌনে ৫ টার দিকে আদনান শিক্ষার্থীর বাসার সামনে আকবর শাহ্ মিনার মোড়ে এসে তার সাথে দেখা করার জন্য জোড়াজোড়ি করতে থাকে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে দেখা করার জন্য তার বাসা থেকে বের হন। আদনান সে সময় শিক্ষার্থীকে জানান তার এক বড় ভাই, ভাবী ও তার কয়েজন বন্ধু আকবর শাহ্ এলাকার নন্দন হাউজিং এলাকায় থাকে সেখানে শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আকবর শাহ্ এলাকার নন্দন হাউজিং সোসাইটির একটি বিল্ডিং এর ৬ তলার একটি রুমে নিয়ে মারধর ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ধর্ষণ করে আদনান। পরবর্তীতে আদনান শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিলে সে তার মাকে সমস্ত ঘটনা অবহিত করে। শিক্ষার্থীর মা স্থানয়ীদের পরামর্শে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে শিক্ষার্থী নিজে বাদী হয়ে রাকিবুল ইসলাম আদনানের বিরুদ্ধে আকবর শাহ্ থানায় মামলা করেন।
রাকিবুল ইসলাম আদনানের বিরুদ্ধে আনিত ধর্ষণের ব্যাপারে তার পিতা শামসুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে বলে আমার ছেলের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচয় হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ধর্ষণের অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম আদনানের পিতার মোঃ শামসুর বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অপকর্মের অভিযোগ। বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় ধর্ষক আদনানের পিতা শামসুকে সবাই চাঁদাবাজ হিসাবেই খুব ভালো চিনে। যদিও শামসু এবং তার পরিবার একটা সময় নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেত এখন সেই সামসু চাঁদাবাজি করেই লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। অত্র এলাকায় শামসুর রয়েছে বিশাল একটা গ্যাং যাদেরকে ম্যানেজ করে এবং লালন-পালন করেই প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজির হাট জমিছে শামসু প্রকাশ চাঁদাবাজ শামসু প্রকাশ অটো শামসু।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাকিবুল ইসলাম আদনানের পিতার মোঃ শামসু বায়েজিদ এলাকার শীর্ষস্থানীয় চাঁদাবাজ। তার বিরুদ্ধে বায়েজিদ এলাকায় ব্যাটিরী চালিত রিকশার টোকেন বানিজ্যসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বায়েজিদ এলাকায় ব্যাটিরী চালিত রিকশার টোকেন বানিজ্য করে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা
জানা যায়, শামসুর পুত্র আদনানও পিতার পথ অনুসরণ করে অল্প বয়সে হয়ে উঠেন বখাটে ও নারী লোভী হিসেবে। এলাকাবাসীর তথ্য মতে, এর সাথে আদনান স্থানীয় কিশোরদের নিয়ে তৈরি করে একটি গ্যাং। এই কিশোর গ্যাং এর নেতৃত্বে দেয় সে। রাকিবুল ইসলাম আদনান নিজেকে পরিচয় দেন নেতা হিসেবে ।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০২ আগস্ট ২৩/ আর এম