একেএম ফারুক হোসেন :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানা এবারের (৪১তম) বিসিএসে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।পরীক্ষায় তিনি প্রশাসন ক্যাডারের ৯০তম স্থান অর্জন করেছেন।এমন সংবাদে খুশির জোয়ার বইছে নাসরিনের পরিবারে।বর্তমানে তিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।১৯৯৩ সালে পাবনার সুজানগরে জন্মগ্রহণ করেন নাসরিন সুলতানা।পিতা নজরুল ইসলাম ও মা রাবেয়া বেগমের ২ কন্যার মধ্যে নাসরিন বড়।তার বোন নিশাত নওসিন নাজ বর্তমানে ইডেন কলেজে অধ্যায়নরত।২০০৮ সালে সুজানগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে ভর্তি হন।সেখানেও মেধার সাক্ষর রেখে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে পাশ করেন।এরপর পরিসংখ্যান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন।সেখান থেকে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করে ২০১৮ সালে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা হিসেবে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে যোগদান করেন।তবে তার আগেই তার বাবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান।এরপর পুরুষ শূন্য পরিবারে তার মা রাবেয়া বেগম মেয়ের বিয়ে দেন আরেক মেধাবী (৩৫তম) বিসিএস বন,ক্যাডার সরকারি কর্মকর্তা কাজী তাারিকুর রহমানের কাছে।বিয়ের আগে মেয়ের বিসিএস স্বপ্নের কথা বলে নেন তাদের মা রাবেয়া বেগম। বিসিএস জয়ের গল্প: ছোটবেলা থেকে মেধাবী হওয়ার কারণে বাবা-মা, শিক্ষকদের কাছে অধিক আদর যত্ন পেয়ে থাকতেন নাসরিন।মেয়ের এমন মেধা দেখে বাবা প্রায় বলতেন,আমার মেয়ে একদিন প্রশাসন ক্যাডার হবেই।বাবার এমন বলা কথা কিশোরী নাসরিনকে অনুপ্রেরণা দিত।যে কারণে বাবার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে রাতের পর রাত জেগে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। বিয়ের পর হতে স্বামী-সংসার, চাকরি ও সন্তান পেটে নিয়েই চলে বিসিএস প্রস্তুতি।মাঝেমধ্যে হতাশায় পড়ে যেতেন।তখন তার স্বামী বন্ধুর ন্যায় পাশে থেকে সাহস যুগিয়ে ছিলেন।আর প্রায় বলতেন,তুমি বিসিএসে পাশ করবে।এসকল অনুপ্রেরণাকে সাথে নিয়ে কঠোর অধ্যাবসায়ে অদম্য নাসরিন সুলতানা আজ বিসিএস ক্যাডার।এ প্রসঙ্গে নাসরিন সুলতানা খুশির পাশাপাশি আক্ষেপ করে বললেন,আজ যদি বাবা বেচে থাকতো তাহলে তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন।তাছাড়া আমার স্বামীও আমাকে সবসময় পাশে থেকে সাহস দিয়ে গেছেন। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।স্বামী সহকারি বন সংরক্ষক কাজী তারিকুর রহমান বলেন,সে যেন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে দেশ ও জাতির কল্যানে কাজ করে যেতে পারে তার জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/০৯ আগস্ট ২৩/আর এম