নুরুন্নবী নুরু:
রংপুরের বদরগঞ্জে দুই নারীসহ পর্নোগ্রাফি তথাকথিত ভুয়া সাংবাদিক প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার। চক্রটি নারীদের দিয়ে কৌশলে প্রেমের অভিনয় করে সম্পর্ক একটু ঘনিষ্ঠ হলেই শুরু হয় প্রতারণার বিভিন্ন ফন্দি মোবাইল ফোনে বাড়ীতে ডেকে এনে জোর পূর্বক আপত্তিকর ছবি মোবাইল ফোনে ও ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ভাইরাল করার কথা বলে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তারা । এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করেছে চক্রটি এরা হলেন বদরগঞ্জ পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ড চাঁদ কুটির ডাঙ্গা মহল্লার মাসুদ রানা‘র স্ত্রী নুরনাহার শিল্পি । ৩নং ওয়ার্ড মুন্সিপাড়া মহল্লার শামসুল হকের মেয়ে ও রিপন এর স্ত্রী ডিফোর্স লিপি ইসলাম। ৭নং বালুয়াভাটা মহল্লার আমিনুল ইসলাম ওরফে ধলা বুলুর ছেলে পর্নোগ্রাফি তথাকথিত ভুয়া সাংবাদিক মনজু পাইকার। কুতুবপুর খিয়ারপাড়া গ্রামের ছলেমান সরকারের ছেলে দুলাল সরকার ও পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ড গরুহাটি এলাকার তারাজুল ইসলামের ছেলে বেলাল হোসেন। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মটরসাইকেল,নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও নগদ টাকা। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় বদরগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-বি ) আবু আশরাফ সিদ্দিকী। এসময় উপস্থিত ছিলেন বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নজরুল ইসলাম। তদন্ত ওসি শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু আশরাফ সিদ্দিকী বলেন এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নানান অপকর্মের সঙ্গে জরিত। এরা ওই সব মেয়েদের দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আপত্তিকর ভিডিও ছবি মোবাইল ফোনে এবং ক্যামেরায় ধারণ করে অনলাইনে ভাইরাল করার কথা বলে বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। তিনি আরো বলেন বিভিন্ন জনকে টার্গেট করে বিভিন্নভাবে টাকা হাতিয়ে নিত তারা। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর শহরের একটি বীমা কোম্পানীর ব্যবস্থাপককে কৌশলে টার্গেট করে। ২২ জুলাই প্রতারক চক্রটির সদস্যরা বীমা করার কথা বলে ওই ব্যবস্থাপককে ডেকে এনে পৌর শহরের চাঁদকুঠির ডাঙ্গা শিল্পির বাড়িতে ।এরপর সেখান থেকে কৌশলে ওই ব্যবস্থাপককে পৌর শহরের মুন্সিপাড়া লিপির বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানে শিল্পি ও লিপি নানাভাবে তার সাথে সময় কাটায় একটু পরে সেখানে হাজির হয় পর্নোগ্রাফি তথাকথিত ভুয়া সাংবাদিক মনজু পাইকার ও বেলাল হোসেন। তারা ওই বীমা ব্যবস্থাপককে নগ্ন করে ভিডিও ছবি ধারণ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করে জোর পূর্বক মটরসাইকেল কেড়ে নেন তারা। ওই বীমা ব্যবস্থাপক যাতে তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারে সেজন্য জোর পূর্বক তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়ে তাড়িয়ে দেয় ভুয়া সাংবাদিক মনজু পাইকার । এর পর ফোন কলে ২৫ জুলাই মটরসাইকেল দেয়ার কথা বলে তাকে ডেকে এনে বলা হয় মটরসাইকেলটি দুলালের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।৫০ হাজার টাকা দিয়ে মটরসাইকেল নিতে হবে তখন উপায় না পেয়ে ওই বীমা ব্যবস্থাপক ৫০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয় প্রতারক চক্রের সদস্য ভুয়া সাংবাদিক মনজু পাইকারকে টাকা নেওয়ার পরেও মটরসােইকেলটি ফিরে না দিয়ে বিভিন্ন ভয়-ভীতিদেখিয়ে ওই বীমা ব্যবস্থাপককে তাড়িয়ে দেয় । অবশেসে উপায় না পেয়ে সোমবার (৭ আগস্ট) ওই বীমা ব্যবস্থাপক বদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন এর পর থেকে পুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে চক্রটির ৫সদস্যকে গ্রেফতার করে । বদরগঞ্জ থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন গ্রেফতার কৃত ওই ৫জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১২ এর ৮ (২) ধারায় মামলা হয়েছে। এছাড়া ওই মামলায় আরো কয়েকজন আসামী এখনো পালাতক আছে খুব দ্রুত তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।