কক্সবাজারে সুফল প্রকল্পের জীবিকা উন্নয়ন তহবিলের চেক বিতরণ

0
505
আবু সায়েম:
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আয়োজনে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় বন নির্ভরশীল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে জীবিকা উন্নয়ন তহবিলের চেক বিতরণ  অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ২০০ জন স্থানীয় সুবিধাভোগীদের মাঝে প্রথমধাপের মোট টাকার ৬০% হারে প্রতিজনকে ২৫২০০ টাকা করে মোট ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে রামু উপজেলার ঈদগড় রেঞ্জের আওতাধীন বউঘাটায় তহবিলের এসব চেক হস্তান্তর করেন সুবিধাভোগীদের হাতে। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক প্রান্তোষ চন্দ্র রায়ের সঞ্চালনায় ও রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মোস্তফার সভাপতিত্বে উক্ত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য রাখেন, নেকমের উপ সহকারী প্রকল্প পরিচালক ড.শফিকুর রহমান, প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল কুদ্দুস রানা, ঈদগড় রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার, ঈদগাঁও রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খাঁন , নেকমের অফিসার দিপন চাকমাসহ স্থানীয় ইউপি সদস্যগণ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, সাসটেইনেবল ফরেস্ট এন্ড লাইভলিহোড (সুফল) প্রকল্পের অর্থে বনায়নের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ সামাজিক অবকাঠামোর উন্নতি হচ্ছে। জনগণকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে বন বিভাগের এই প্রথম দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সুফল প্রকল্পের সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনায় কার্যক্রমের আওতায় অনেক অস্বচ্ছল নারী-পুরুষ আজ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। দিনদিন আত্ননির্ভরশীল হচ্ছেন। এই টাকায় শুধু বনায়ন নয়, অনুন্নত এলাকায় সড়ক, কালভার্ট, নলকূপ, সাঁকো, সীমানাপ্রাচীর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ইত্যাদি নির্মিত হয়েছে। যাতে বাড়ছে সামাজিক সম্প্রীতি-সমৃদ্ধি।
সভাপতির বক্তব্যে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মোস্তফা বলেন,বনভিত্তিক মানুষের জীবন জীবিকায় গতিশীলতা এনে দিয়েছে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্প। গাছ দারিদ্রতা হ্রাসের পাশাপাশি আমাদেরকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। মহামারী করোনাকালে অক্সিজেন সংকটে অনেক ধনীরাও মারা গেছেন। এটা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তাই প্রাপ্ত এই টাকায় আপনারা নিজের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে তা রক্ষার অনুরোধ জানান। তিনি উপজেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসন সোচ্চার উল্লেখ করে বলেন, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতায় কাজ করা হয়েছে। কোথায় বাল্য বিবাহ হলে তথ্য আমরা পাই। আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপজেলায় বাল্য বিবাহ সম্ভব না। গোপনে কেউ এমন কাজ করলে জরিমানার পাশাপাশি শাস্তি দেয়া হবে বলে বাল্যবিবাহ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান তিনি। বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ১০টি রেঞ্জে সুফলের আওতাধীন প্রায় ৬ হাজার২৩৬ হেক্টর জমিতে ইতিমধ্যে বনায়ন সম্পন্ন করা হয়েছে। তাছাড়া এই সুফলের ৫৭টি গ্রুপ রয়েছে। প্রত্যেক গ্রুপকে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করা হয়েছে। ওই টাকা থেকে সদস্যরা নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীমূলক বিভিন্ন খাতে ব্যয় করে নিজেরা ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে।
অন্যদিকে,কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগে সুফলের নির্ধারিত গ্রুপ বাদে ব্যক্তি পর্যায়ে সুবিধাভোগী রয়েছে ৩৮০০ জন। যাদের প্রতিজন ৪২ হাজার টাকা করে পাচ্ছে। গত বছরে জুন থেকে এপর্যন্ত ৩ হাজার ৫১৭ জনের মধ্যে ১০ কোটি ৭৯ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ করেছে উত্তর বন বিভাগ। এছাড়া কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের খাতে দিয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ২৬ হাজার ৪১২ টাকা, বন পাহারার জন্য ১ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার এবং কমিউনিটি অফিস ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয়েছে ১৭ লাখ ১০  হাজার টাকা।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৭ আগস্ট ২০২৩/ আর এম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here