মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

0
227
মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
আলোকিত ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে আগামী ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠেয় ১৫তম ব্রিকস (দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক রাষ্ট্রগুলোর জোট-ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামীকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্যপদ পাবে কি না সন্দেহ আছে, তবে  তাড়াহুড়া করতে চায় না বাংলাদেশ । এই সফরে ওই অঞ্চলে কর্মরত বাংলাদেশের দূতদের নিয়ে আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে আগামী ২৬ আগস্ট সকালে প্রধানমন্ত্রী জোহানেসবার্গ থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি মাতামেলা সাইরিল রামাফোসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে গত ২ জুন অনুষ্ঠিত ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আমি ভার্চুয়ালি যোগদান করে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছিলাম। সেখানে আমি ব্রিকস সদস্য দেশগুলোকে তাদের ব্যয় সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে হস্তান্তর এবং উদ্ধৃত্ত অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলো বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিলাম। এ বছর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগদানের বিষয়ে আমাদের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা এবং উন্নয়নমূলক সহযোগিতার লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য থেকে তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহারাইন, ইরান, সৌদি আরব এবং সিরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ২০ টিরও বেশি রাষ্ট্র ব্রিকস জোটে যোগদানের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চলতি বছর জেনেভাতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি মাতামেলা সাইরিল রামাফোসা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে দাওয়াত দেন। তখন আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, তারা ব্রিকসের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান। এখন তারা পাঁচজন, এটা বাড়াতে চান এবং তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন যে আরও কয়েকটি, আমার যদি ঠিক মনে থাকে আটটি দেশের কথা বলেছেন। এখন দেখছি যে ২২টির মতো দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু তিনি মনে হয় বলেছেন আটটির মতো বাড়াতে চাইছেন এবং আমাদের কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন। বাংলাদেশকেও তাদের সদস্য করার চিন্তা-ভাবনা করছেন। তবে চূড়ান্ত হয়নি। এখন শুনতে পেয়েছি তারা এ মুহূর্তে নতুন সদস্য নেবেন কি না-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ তারা একটা মোডালিটি (পদ্ধতি) তৈরি করবেন যে কী প্রেক্ষাপটে নতুন সদস্যদের নেবেন। আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করব না।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে তারা নতুন সদস্য করবে কি না জানি না। তবে আমরা এরই মধ্যে ব্যাংকে জয়েন করেছি, আমরা কয়েকটি প্রকল্পে অর্থ সহায়তা পেয়েছি, যার মধ্যে রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে দুুটি প্রকল্প রয়েছে। ব্রিকসে যোগ দিতে পারলে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা পাব। আমরা আফ্রিকাতে সম্পর্ক বাড়াতে চাই, যেখানে ব্রিকসের মাধ্যমে যেতে সুবিধা হবে। সেখানে ৫৫টি রাষ্ট্র রয়েছে। আফ্রিকায় আমাদের সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আমাদের বিশ্বাস, এতে করে আমাদের সম্পর্কে উন্নতি ঘটবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিটে’ যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকার দেশগুলো নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের অংশগ্রহণে আয়োজিত ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলন’ এ অংশ নেবেন। একই দিন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতিসহ ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগদান করবেন। আগামী ২৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ‘ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ’ শীর্ষক ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এ ডায়ালগে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপ ব্যাংকের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। বিশ্বর প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই সফরের সাইড লাইনে চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাইড লাইনে বৈঠকের কথা শোনা যাচ্ছে, এছাড়া আর কার কার সঙ্গে সাইড লাইনে বৈঠক হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সফরে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য আফ্রিকার অনেক দেশ অনুরোধ জানিয়েছে। আমরা সেগুলো বিবেচনা করছি। এগুলোর সময় এখনও নির্ধারিত হয়নি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সাক্ষাৎগুলো শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২১ আগস্ট ২৩/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here