সাতক্ষীরায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, ডিজি প্রতিনিধি কে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের নিয়োগে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে পাতানো বোর্ডে ৩ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সাতক্ষীরা তালা উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈয়দ দিদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, অফিস সহায়ক পদ শুন্য হওয়ায় গত ২৬-০৪-২৩ ইং তারিখ পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে চাকরি প্রত্যাশিরা নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী উক্ত পদের বিপরীতে আবেদন করেন। আবেদন প্রত্যাশিদের মধ্যে তিন পদের বিপরীতে ৩ জন প্রার্থীকে নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়োগ বোর্ডের পূর্বে মনোনীত করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান ও অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তালা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাপড়ি পরস্পর যোগসাজশে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে লোভের আশায় বশিভূত হয়ে শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তিন জন প্রার্থীকে মনোনীত করে তাদের নিকট থেকে উল্লেখিত পদের বিপরীতে ৪০ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহন করেন। অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে তালা উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের নওয়াব আলী এর ছেলে মোঃ নয়ন হোসেন কে মনোনীত করে নিয়োগ বোর্ড বসানোর পূর্বে তার নিকট থেকে ১৬ লক্ষ টাকা সৈয়দ দিদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুরশিদা পারভীন পাপড়ি ১৬ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। একই উপজেলার সুভাষিণী গ্রামের রফিক মোড়লের ছেলে মোঃ রায়হান হোসেন কে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে মনোনীত করে তার নিকট থেকে ১২ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। একই উপজেলার সুভাষিণী গ্রামের রুস্তম সরদার এর ছেলে মোঃ মনিরুজ্জামান কে অফিস সহায়ক পদে মনোনীত করে নিয়োগ বোর্ড বসার পূর্বে তার নিকট থেকে ১২ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, তালা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাপড়ি। উল্লেখিত ৩ জন প্রার্থীর নিকট থেকে ঘুষ বানিজ্যের কালো টাকা সাদা করার জন্য সাতক্ষীরা তালা উপজেলার তালা সরকারি বিদে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ডিজি প্রতিনিধি অজয় কুমার হালদার ও তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ কে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে গত ০১-০৯-২৩ ইং তারিখ শুক্রবার রাতের আধাঁরে অদৃশ্য একটি পাতানো নিয়োগ বোর্ডে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কর্তৃক মনোনীত ৩ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে বলে একাধিক ব্যক্তি দাবি করেছে। নিয়োগ বোর্ডের পূর্বে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কর্তৃক ৪০ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহন করার মাধ্যমে তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, ডিজি প্রতিনিধি, তালা সরকারি বিদে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে উল্লেখিত মনোনীত ৩ প্রার্থীকে পাতানো নিয়োগ বোর্ডে উত্তীর্ণ করা হবে এমন তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জন প্রার্থীর নাম উল্লেখ পূর্বক ঢাকা হতে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকায় ১ ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের ঐ দিন অর্থাৎ গত ০১-০৯-২৩ ইং তারিখ নিয়োগ বোর্ড বসার কথা থাকলেও দৃশ্যমান কোন নিয়োগ বোর্ড না বসিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, তালা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাপড়ি কর্তৃক আগেভাগেই উৎকোচ বিনিময়ে মনোনীত করা তাদের ৩ প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করা হয়। এসব অপকর্মে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ এবং সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসারের মনোনীত ডিজি প্রতিনিধি তালা সরকারি বিদে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার হালদার। এর আগে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদ হুবহু সত্য ঘটনার রুপ নেয়। এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৩ শুন্য পদে নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি ০১-০৯-২৩ ইং তারিখ শুক্রবার সকাল ০৮.৩০ মিনিট নির্ধারন করা হয়। যা প্রার্থীদের প্রবেশপত্রে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা আছে। সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কমিটির বেধে দেওয়া স্ব-ঘোষিত সময় সীমার আগেই সকাল ৮.০০ ঘটিকার সময় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে আবেদনকারী চাকরি প্রত্যাশি তালা উপজেলার সুভাষিণী গ্রামের মোঃ আনছার আলী শেখ এর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান নিয়োগ কেন্দ্রে উপস্থিত হন। তিনি উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন নিয়োগ বোর্ড অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান জানান, তিনি সকাল ৮.০০ ঘটিকায় অত্র বিদ্যালয়ে যেয়ে কোন দৃশ্যমান নিয়োগ পরীক্ষা কিংবা কোন নিয়োগ বোর্ড বসেনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তিনি অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে আবেদন করেন এবং সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান এর সাথে চাকরির জন্য আলাপ করলে প্রধান শিক্ষক ২০ লক্ষ টাকা উৎকোচ দাবি করেন।ভুক্তভোগী উক্ত টাকার যোগান দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার আবেদন করা পদে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির মনোনীত প্রার্থীকে উৎকোচ বিনিময়ে অদৃশ্য নিয়োগ বোর্ডে উত্তীর্ণ করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান ও অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুরশিদা পারভীন পাপড়ি পরস্পর যোগসাজশে অফিস সহকারী পদে মোঃ মনিরুজ্জামান, পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে মোঃ রায়হান হোসেন, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে মোঃ নয়ন হোসেন কে মনোনীত করে তিন পদে ৩ জন প্রার্থীকে মনোনীত করে তাদের নিকট থেকে ৫০ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক মনোনীত তিন প্রার্থীর মাঝে নিয়োগ বোর্ডের আগেভাগেই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ডিজি প্রতিনিধির সহযোগিতায় প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা হয় বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান। তিনি আরও বলেন, উৎকোচ বানিজ্যের টাকা নিয়ে বহালতবিয়তে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুরশিদা পারভীন পাপড়ি। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু সংখ্যক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং ডিজি প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শুন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগে ভাগেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা হয়। এসব প্রশ্ন পত্র ফাঁসের কারণে সাতক্ষীরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিয়োগ বানিজ্য বন্ধ হচ্ছে না। জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার সময় শিক্ষা অফিসার এবং ডিজি প্রতিনিধি নিয়োগ বোর্ডে ফাঁস করা একই টাইপের প্রশ্ন পত্র তৈরি করেন। পরিপত্রের নিয়ম অনুযায়ী সম্পুর্ন ভাবে অবৈধ প্রক্রিয়া ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ। সুশীল সমাজের মতে অচিরেই অবৈধ পন্থায় পাতানো নিয়োগ বোর্ড কার্যক্রম বন্ধ না হলে যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে এবং টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীরাই চাকরি পাবে। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কর্তৃক উৎকোচ বানিজ্যের টাকা থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা এবং নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচির আগেভাগেই পাতানো বোর্ডের মাধ্যমে মনোনীত ৩ প্রার্থীকে অবৈধ পন্থায় উত্তীর্ণ করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বর্তমানে চাকরির বিনিময়ে নিয়োগ বানিজ্য যেন প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অচিরেই এসব পাতানো নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজ। এ বিষয় তালা উপজেলার সৈয়দ দীদার বখ্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস,এম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে আলাপকালে প্রার্থীদের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহণ করার ব্যাপারে অস্বীকার করেন। এ বিষয় তালা উপজেলার সৈয়দ দীদার বখ্ত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তালা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাপড়ির সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে বক্তব্য নিতে চাইলে কৌশলে বলেন তার মোবাইলে সমস্যা হচ্ছে বলে অজুহাত খাড়া করে দ্রুত তড়িঘড়ি করে আলাপ কলটির সংযোগ কেটে দেন। এ বিষয় ডিজি প্রতিনিধি ও তালা সরকারি বিদে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার হালদার মুঠো ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, নিয়োগ বোর্ডের সময় আমি ছিলাম না অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তিনি আরও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার দিন আমার প্রতিনিধি ছিল। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ হয়ে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসানোর ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন। এ বিষয় তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, নিয়োগ বোর্ড নির্দিষ্ট সময় বসেছে। প্রধান শিক্ষক সভাপতি মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে পাতানো নিয়োগ বোর্ডে ৩ জন কে উত্তীর্ণ করার ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন। এ বিষয় সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাজাহান কবির মুঠো ফোনে আলাপকালে বলেন, পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের সময়সূচি অনুযায়ী নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচির আগেভাগেই যদি নিয়োগ বোর্ড বসানো হয় তা হলে সে নিয়োগ বোর্ড অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। এদিকে নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচির আগেভাগেই প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মাধ্যমে পাতানো অদৃশ্য নিয়োগ বোর্ড, উৎকোচ বানিজ্য, সীমাহীন দূর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের তদন্ত পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবির পাশাপাশি অবৈধ নিয়োগ বোর্ড বাতিল করন সহ পুনরায় একটি সচ্ছ জবাবদিহি মূলক নিয়োগ বোর্ড বসানোর জোর দাবী জানিয়েছেন চাকরি প্রত্যাশি ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান, সুশীল সমাজ সহ স্থানীয়রা।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩/ দ ম