নড়াইল ২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর গাড়ি বহরে হামলায় নেতা-কর্মীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

0
742
জাহিদুল হক রনি, নড়াইল
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়াইল ২ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক লেঃ কমান্ডার (অবঃ) এ এম আব্দুল্লাহর গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গত (১৩ সেপ্টেম্বর) বুধবার, লেঃ কমান্ডার (অবঃ) এ এম আব্দুল্লাহ তিন শতাধিক মোটরসাইকেল সহ গাড়ি বহর নিয়ে নড়াইলের শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া বাজারে পৌছালে দূর্বিত্তরা তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় প্রায় ১০-১২ টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ঘটনায় এ এম আবদুল্লাহ নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুসারীদের দায়ী করে সংবাদ সম্মেলন করেন। ঘটনাটি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ বিষয়ে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সি আলাউদ্দিন বলেন,হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত, আমি এর নিন্দা জানাই, আমার মনে হয় বর্তমান এমপি সাহেবের তুমুল জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে তৃতীয় কোন পক্ষ চক্রান্ত করে এ হামলা করেছে যাতে করে লোহাগড়াবাসীর চোখে এমপি সাহেবের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়। নির্বাচনী গণসংযোগ যে কেউ করতে পারে, কিন্তু আমি মনে করি আমাদের বর্তমান সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজা দলীয় মনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে এ আসনে তার উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তার জন্য। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সৈয়দ মশিয়ূর রহমান বলেন, আমি দলীয় কর্মসূচীতে ঢাকায় অবস্থান করছি, হামলার ঘটনা শুনেছি, আমি এর নিন্দা জানাই। নির্বাচনী গণসংযোগ যে কেউ ব্যক্তিগত ভাবে চালাতে পারে, এটা আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন বিষয় না এবং আমরা ওনার গণসংযোগের বিষয়ে কিছু জানিনা। গণসংযোগে হামলার ঘটনায় আমাদের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুসারীরা কোন ভাবেই জড়িত না। আমাদের এমপি মহোদয় অত্যন্ত সজ্জন মানুষ তিনি উন্নয়নে বিশ্বাসী, কোন অরাজনৈতিক কর্মকান্ড তিনি সমর্থন করেন না। লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও জেলা যুবলীগ নেতা শেখ সদর উদ্দিন শামীম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা এ এম আবদুল্লাহর গাড়ি বহরে হামলার বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমাদের সংসদ সদস্য মহোদয় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। তারপরও আবদুল্লাহ ভাই আমাদের এমপি মহোদয়ের নামে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।শাহাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি জামায়াত অধ্যষুত এলাকা, উনি কেন, কোন উদেশ্য নিয়ে হঠাৎ করে গাড়ি বহর নিয়ে ওখানে গেলেন! বিগত লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড় ঝাপ করেছেন, তখন তো ওনার সাথে গুটিকয়েক লোক ছাড়া দলীয় কেউ ছিল না। আমি মনে করি নির্বাচনের আগে বর্তমান এমপির জনপ্রিয়তাকে হেয় করতে এটা একটা সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছু না। উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিকদার জিয়াউর রহমান বলেন এ এম আবদুল্লাহ ভাই আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান, আমরা তাকে সম্মান করি। কিন্তু ওনার কিছু কর্মকান্ড আমরা পছন্দ করি না, উনি ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে সব নির্বাচনেই প্রার্থী হন,একা একা মোটরসাইকেলে গণসংযোগ চালিয়ে যান কিন্তু নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকেন না।এবার হঠাৎ করে কেন জামাত বিএনপির ঘাটিতে গেলেন আর হামলার শিকার হয়ে বর্তমান সাংসদের অনুসারীদের দায়ী করছেন এটা বুঝতে পারছি না। উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম আবুল কাশেম বলেন, আবদুল্লাহ সাহেবের পরিবারের সবাই প্রতিষ্ঠিত চাকুরিজীবী। হঠাৎ করে সরকারি চাকরি ছেড়ে উনি নির্বাচন আসলেই প্রার্থী হয়ে যান,ইউপি,পৌর, উপজেলা কোনটাতেই প্রার্থী হতে বাদ দেননি!পরে জনসমর্থন না পেয়ে নিজে নিজেই বসে পড়ে, ওনার এধরণের কর্মকান্ড এলাকাবাসীর কাছে হাস্যরসের সৃষ্টি করে। পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, আবদুল্লাহ ভাইয়ের নিজের এলাকা লোহাগড়াতেই তেমন সমর্থন নেই, এলাকায় কখন কোন প্রোগ্রাম করে আমরা দলীয় ভাবে সেটা জানি না।আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান সংসদ সদস্যদের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরতে, তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার না করতে। উনি হঠাৎ করে দলীয় নেতা-কর্মীদের না জানিয়ে গনসংযোগ করে হামলার শিকার হয়ে আমাদের এমপি মহোদয়ের অনুসারীদের দোষ দিচ্ছেন,এটা আমাদের বোধগম্য না।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here